শৄঙ্খলিত জীবন, খুঁজে মরা, ভুলের বোঝা,
বেলাশেষে গোধুলিবেলায় হল তো সময়
খেলাঘরের দুয়ার খোলার, আকাশ হবার।
করার ছিল কতকিছু,আপনবৃত্তে রাজাসাজা, অলসবিলাসে পরাণ জুড়ায় ,পল,ক্ষন অব্যয়
অখন্ড অবসর জীবনগারদের বাঁধ ভাঙার।
একটি কালো কবিতা
পথচলতি পাগলা হাওয়ায় চিতি সাপেরও আড়মোড়া ভাঙে,
নীরবতার একটা কালো কবিতা অন্ধকারেই সাজায় অবনী ।
মৄত্যুতেও শুরু হয় এক নতুন ঝরঝরে অশ্রুত রাগবাহার।
ফোঁসফোসানী শুরু করে চিতি , শিকার অথবা নিজেই শিকারী ।
আমি কে ?এই আধাঁরে কেন ,কালোতেই তো প্রতিবিম্ব সুস্পষ্ট,
কৄষ্নসাগরে ঝাঁপ দেবার আগে অবনী আর কালোচিতি এক আত্মা ।
নিস্তব্দতার কবিতা , আখরমালা সাজে আপন সুরে ফিরে মৄত্যুগহ্বর ,
হেমলক তুই এতো তরল ,এতো তীব্র আবাহন ,বড়ো নিবিড় সুনিবিড় ।
তাপচুল্লীর দরজা খোলে ক্ষনিকতরে, চোখ ধাঁধিয়ে তীব্রছটায় সুতীব্র,
এতো শীতল আবাহন , কৄষ্নসার হরিণ এই তাপে পোড়ে না পুড়েই ছাই ।
দিকহারা নিকস মধুময় প্রেমে অপ্রেমে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে আলিঙ্গনে আঁধার,
অবনী তার উদ্দাম আবেগে বন্ধ করে সব জানালা দরজা সব সব কপাট ।
জেল সেলুলার ,আবেগ অনুভুতি হাতে পায়ে লৌহশৄঙ্খলিত জীবনচেতনা,
কালাপানির ঘুম ভেঙেছে কালোমনে এদোল ওদোল চেনা মুখের ভীড় ।
মহামিছিলে এমন নোনাচোখ, প্রবাহমান কঙ্কালে টঙ্কারে মৄত্যুগীতিকা ।
চোখ বুজে আসে ,মধু আবেশে অন্ধকার তোকে জড়িয়ে মরে বেঁচে ডুব,
কৄষ্ন সমুদ্র মরণে ভেসে চলে জীবনভেলা ।।
স্থবির
আচ্ছা, কোন বাসে উঠি ,পৌছুতে হবে সঠিক ঠিকানায়
দাড়িয়ে আছি এক্সাইড মোড়, ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়েই
কত নম্বর বাস ,মনে আসছেনা কিছুতেই চেনাপথেই ভুলভুলাইয়া
আমি যে এখন কি করি, ওই পাগলটাও তো একটা পা তোলে
আর নামায় ,স্থবির একই জায়গায় ।
দক্ষিণেশ্বরে মাকে প্রনাম,শিবের মাথায় জল গঙ্গাস্নান শুদ্ধমন,
বেলুড়ে তুমি রাম তুমিই কৄষ্ন, মনপ্রাণ তোমা পানে ধায় ।
ফেরার পথে শ্যামবাজার গোলবাড়ি কষামাংস দুটো করে রুটি,
গৄহে পত্নি প্রেমে গদো গদো বাইরে মন এদিক ওদিক চায় ,
একই রুটিন মন ,স্থবির একই জায়গায় ।
ইঁদুর দৌড়, বাঁশে যতই তেল মাখানো থাক নবনব রুপে
ইশ্বরের নামে কত্তা ভজন টিকে তো থাকতে হবেই ।
হলদেটে শেষের কবিতা, ফেসবুক আর হোয়াট্স আপে
অমর হয়ে যায় লেখনী রুপে কি-প্যাডের অক্ষরমালা ।
অচলায়তন ,স্থবির একই জায়গায় ।
কাজের মাসিটা বড়ো বেয়ারা, কামাই করলে চলে ?
ফ্যাশান শো এর আরেন্জমেন্ট, সবাই কন্ট্রিবিউট করবে
অনাথ আশ্রমে দান,সাংবাদিক কুল কেউ বাদ পড়েনিতো ?
এর মাঝে আবার রান্না, দুর একটা ফোন ডোমিনোজ আর
সচিত্র স্ববিজ্ঞাপন , স্থবির একই জায়গায়
সময় অফুরান,
বলতে পারেন বাসের নম্বরটা ??
চোখের আলোয় ঝাপসা দুপুর,
হেঁটে ফেরা পুরোনো গিটার,
তার ভুলেছে ছোঁয়ার আঙুল,
ভাঙা জঙ্গলে বারবার আবেশে তোমার দুটি হাত।
নিঃশ্বাসে নীল ভিজে চিঠি,
ভালো থাকা অন্য ধরিত্রী,
পথ চলতি সাতে সুর,
ঘুমে জাগি আরবার আশ্লেষে তোমার দুই চোখ।
পাতা ওড়া ঝরা দিন,
একান্ত লুকানো মনের খাতা,
অষ্টমে সাথী তেলচিটে বিলাস,
শব্দের দহনে ওড়াছাই নিঃশর্ত রক্ত ক্ষরণ।
ফিরে ফেরা মেঘবালিকা
হিজিবিজি সাদা পাতায় এতো আকিবুকি
ইচ্ছা বারুদগুলো নিভে যায় শহর বৄস্টিঘুম ভেঙেছে ।
মোম গলা আশাগুলো নিভে কাঁদে তীব্র হাওয়ায়,
বুকের আগলে সজোরে ধাক্কা মারে হৄদপিন্ড খুঁজে পাইনা ।
আধারে অঝোরে একলা একলাই ভিজি ,ব্যাঙগুলান
শীতঘুমের প্রস্তুতি ছেড়ে আবার জাগে,কাকে ডাকে
দৌড়ে পালায় জ্বলন্ত ফানুসগুলো আকাশের
এই কোন থেকে ওইধার, আমি ভিজি রাতচানে
চিনেআলোগুলো অনুভুতি হীন জ্বলে জ্বলতেই থাকে
বাজিগানে মদির নীরব অন্ধপেয়ালা খানখান,
ভালোবাসা মুখ ফিরিয়ে আগাছাভরা সাধের বাগান ।
বোঝা অবোঝা নাবোঝা গাথামালায়,চোখের জল
মেঘবালিকার ছোয়ায় হিমেল ছোয়ায় বরফ জমাট,
একলা ভিজি অথৈহৄদয় ভিজে আগুন হাহাকারে ।
ধীরে ধীরে আরও একায় একাকার।
তবু আধপোড়া আমের পাতার মতো আদুলে পোড়ে।
মোরাম লালে মেশে ফাটাপায়ের নেভা রক্তের লাল,
চলতে থাকে,পা মেলায় বুড়ো পৃথিবীর সাথে তালেতালে।
মজাপুকুর ভরে হিলহিলে হোগলা আর বেওয়ারিশ বনকাশে।পোয়াতি হাঁস ঠিকানা খুঁজে পায় পাঁকে ভরা ক্লান্ত নর্দমায়। তবু লোকটা চলে।
হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার সন্ধানে কখনও নীলমাধব ভবন কখনও বা কুলচাঁদ দত্তের দখলি ঘরের ইটের পাঁজর।
থমকে থেমে কর্পোরেশনের টাইমকলে তেষ্টা মেটানোর আঁজলা হাতের আঙ্গুল ভাঙে।মোটামোটা ফাইলের পাতা ভরে ভিজে একপেশে ভালোবাসার গল্পগাঁথায়।
টলমলে পা, আঁকড়ে ধরে দুপুরমনির ঝরাফুল। জানালা খোলে, জড়িয়ে ধরে কালচে বাতাস। অপেক্ষায় থাকে একপলকে মাটি ছোঁওয়া।
পাগলের এই পথচলা,
গভীর গহিন অরণ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলা, টুকরো টুকরো করে ভেঙে চুর চুর করা।
আপনাকে বিজ্ঞাপিত করা,
নকল বুঁদির গড়ের ভুল রাজা সাজা,
এই যুদ্ধে ক্লান্তিকর বিরতি।
আকাশ মিনারে সাময়িক ভুলবসবাস
অন্তরকথন, খুঁজে ফেরা শিউলি দুগ্গা ,
সেই স্বপ্ন প্রতি রক্তকণিকায়।
ঝরাপথে তোমার ছোঁয়া পলপল,
আধো যতনে তালাবন্দী,
অমৃত দুগ্গা ভালো বাসা।
তুমি অনন্ত,অন্ধ আলোয়,
টুকরো টুকরো করি ভাঙি আপনাকে,
সমর্পণে অঝোর কান্নাধারায় ।
জাগো,জাগো দুগ্গা।
দিক্ হারানো সবুজ তেপান্তর ,
দিদার কাছে ঠাকুরমায়ের ঝুলি।
কেড়ে নিলাম গাছ ,পাখি ,আকাশ, মাটি,
শুধু ভুলভুলাইয়া, ধরিসনা রঙ তুলি।
শিমুলতলায় গুলতি গুলি, লুকোচুরি, গাছের ঝোপ
চু কিতকিত,কুমিরডাঙা , ওপেন টি বায়োস্কোপ ।
বড় ভার ইস্কুলের পড়া সেইতাসের দেশ,
বন্ধ গরাদ কাঁদে, পালায় কিসের উদ্দেশ ।
।।সবই কেড়ে নিলাম,
রাত আধাঁরে কান্না, ওই বালক ভোলানাথ
তবুও বাসযোগ্য পৄথিবীর বোকা স্বপ্নে পাগল মধুকর।।
পুজো পরিক্রমা
বাবা কাশীনাথ,কদিন ভালোই কাটলো বল
সেই বাঘমুন্ডীর পাহাড় কোলে সবুজগ্রাম
মাকে ছেড়ে, শহরের মায়ের মন্ডপ ,
কাঁসিতে বোল তুই ভালোই তুললি বাপধন ।
বাবাগো আমাদের গ্রামে কেন শুধু পিদিম
বান ডাকে আলোর শুধু এই শহরভরে ?
মায়ের সাজের এতো বাহার, দেশগ্রামের
মাকে ,বাবা একটা নতুন শাড়ী কিনে দিস কিন্তু ।
৬৪ বছর,সেই কামারপুকুর,প্রতিবছর আসি ভাই
ব্যাগে খালি এক জলের বোতল, বছর পর বছর
আশ মেটেনা মাগো,তুই জোটাস খাবার,জায়গা শোবার
নবমীর রাতে মল্লিকবাড়ী,ওরা ভোগ ভালোই খাওয়ায় ভরপেট ।
অস্টমীর শেষে সন্ধিপুজা অসুরনিধন ,মহাপুজা
মাগো আমিও মা দোষ কোথায় একটা নয় ,
তেইশজন অসুর আমাকে শতছিন্ন করে সিদুঁরলাল
আমার মরাজীবন সিদুঁরখেলা আর হলোনা মাগো ।
মাকে মন্ডপে আনি আবার ভাসাই গঙ্গা অগভীর,
রোজগার ভালোই আঁধারে আলো কদিন ভালোই ।
শুধু মনকেমন, ছেলে সেই ক্যানিং নদীর ওপার
বড্ড কাঁদছিলো গো, আসছে বছর আবার এসো মা ।
রেশনে চাল ১০ টাকা কেজি, এবারে অনেকটা চলবে অনেকদিন ।
উছলে পড়া আনন্দ, মুঠো ভরা খুশি ,চাল একটু মোটা তবুও
আছড়ে পড়া জীবনে চারপাঁচদিন মায়ের আরাধনা, না ফোঁটা অতসী
আসছে বছর আবার ভরপেট আসিস কিন্তু দশভুজা মা
আমার দুগ্গা, তুই বছরভর পালিয়ে ফেরা, প্রতিদিন প্রতিভোর
মনপিদিম জ্বেলে জ্বলিস অমলধুলোয় ভালোবাসায় একা কান্নায়,
চোখের কোনের কালিতে , গোপন অপ্রকাশে শ্থবির নীরবতায়
জেগে ওঠ মা অসুরনিধনে বোকাস্বপ্নের নিত্য কল্পকল্পনায় ।