Wednesday, April 22, 2020


একলা আঁধার আকাশ জুড়ে নাথ হে তুমি,
কত কথা কানে কানে উন্মুক্ত হৄদিবাতায়ন ।
মুখোশ টেনে ছিড়ি,প্রিয়তম তোমারেই নমি,
উতল হাওয়া,অধরা অশেষ, অনিমেষ নয়ন।

আজ  ছাদে বসে তারা গুনতে গুনতে সত্যকামের চোখ দুটো অসীম ক্লান্তিতে জুড়ে আসছে,কোন কিছুতেই আর কিছু যায় আসেনা।
দিন রাত্রির কাব্যের আর অন্ত বলে কিছু নেই ।মাথার মধ্যে পোকাগুলো সব কিলবিল করে,ওরা বেরিয়ে আসতে যায়, তীব্র জ্বালা, পুড়ছে। খুব অবাক হয় সে ,কেন আর কিভাবে সে আছে, বেঁচে আছে?


সেই চন্ডিতলায় ফিরে যায়,আলপথ দিয়ে দৌড়ে দৌড়ে ,আছে সেই বটগাছ এখনও আছে,সেই পুকুর। কত ডোর বটগাছটাকে জড়িয়ে আছে,সত্য ও বেঁধেছিল। কিছু চেয়ে। যে দেবতার থানে সে শুয়ে শুয়ে দিনে দুপুরে কত  কিছু ভাবতো,স্বপ্ন দেখতো, সেটাকে একবার ছুঁয়ে দেখলো, এখনও সেই একই অনুভূতি,সেই আদরের ছোঁয়া।চোখ বুজে শুয়ে পড়লো, বুকটা ধড়ফড় করছে,কেন যেন দমটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আরও আরও নিজেকে মিশিয়ে দিল ভাঙাচোরা দেবতার আবছা লাল রঙা থানে। এক অদ্ভুত আবেশ। কল্পমায়ায় চলতে শুরু করে।
লাল মোরামের পথ বিকেলের আগুন লালে মিলতে চায় আকাশের সীমায় । পলক পড়েনা ।রাধাচূড়ার মোহমায়া রক্তচুড়ায় ।ঠাকুরথানে বসে দেখে আর শুনে আকুল হয় উদাস বাউলের গানে ।মরণরে তুহু মম শ্যাম সমান । কেন এই গান ?  দিনের শেষে অচিন সবুজ পাখি বাড়ি ফেরার চাওয়ায় হারায় গহিন গহনে ।

আর ওদিকে
আবছা আকাশ  একা তালগাছটা দাড়িয়ে আছে ।পাতা ঝরছে । কয়েকটা বাবুই এর বাসা দুলছে ঝুলছে ।পাখিগুলো যে কোথায় উড়ে গেলো । ভেজা মনে দাওয়ায় শুয়ে আকাশপানে তাকিয়ে আছে পাগল ।ঘুম নেই চোখে । শুকতারার সাথে একটু যে অসুখের গান গাথবে তার জো নেই ।মেঘের চাদরে শুকতারার মন ঢেকে গেছে ।কুড়ের চালে খড়পোকাগুলো শিরশিরানি ধরিয়ে দিয়েছে ।জীবনটা কোথায় যে লুকোলো ।অবনীর বড়ো ভয় এই রাতেই জলে ভেজায় বেল জুই। শুকিয়ে না যায় । অবনী অন্ধকারের যে একটা নিজের গন্ধ আছে তাতে নিজেকে ডুবিয়ে দেয়।জনগহনের সবুজে কত অবুঝ মন।কথার মালা এতো নীরবে সরব ।পাগল সেই ভিড় ঠেলে মরা ন্যাড়া ফ্যাকাশে গাছটার তলায় বসে বসে একলা ভাবে ।তুলসীর মঞ্চটা কোথায় যে হারিয়ে গেলো ,ভাঙ্গা প্রদীপটা পড়েই আছে ।কতদিন দেখেনি পিদিমের আলোয় মায়ের ভালোবাসা ।চলতে শুরু করে অচেনা পথে ।এলোমেলো ঘুমে আকাশের কোলে গাছের সার ।

অন্যদিকে
নীরা অখন্ড অবসরে একমনে সেই নীলাম্বরী শাড়িটা কাঁচি দিয়ে কাটছে। ওইটা দিয়ে একটা চুড়িদার বানাবে, মাথায় একটা ভালো আইডিয়া এসেছে।
ঠিক এই সময়ে হঠাৎ উল্টো দিকের  ফ্ল্যাটের জানালা পেরিয়ে বেসুরো চিৎকার ভেসে আসে।

'মৃত্যুময়তা আজ  টপ টপ করে সকাল থেকেই,
পিছল করে দিচ্ছে জীবনের ট্রামলাইন।
বুড়ো শালিক আহামরি আনন্দে,এখন ও টিকে তো আছে,
দানাপানি জুটছে দুটো,চারটে বা একটা।
ঝড়ে কলাগাছের পাতাগুলো ফালা ফালা হয়েছে,
একটা ফ্যাৎ ফ্যাৎ আওয়াজ কখনও জোরে কখন ও বা
ঘুমঘোরে।
মেঘলা মুখে  ভোর, দুপুর বা বিকেল সব একাকার লাগে। সবাই কোথায় যে ঘাপটি মেরে বসে আছে, শব্দ মিলছে শবদেহে।
উৎসুক নদীমন , অন্ধকার আবহমান।'

দুস্ , জানালাটা  বন্ধ করে দেয় নীরা,  এই সকালেই।  মোবাইলে হাত চলে যায়।








Wednesday, April 15, 2020

সুমনে

একটি বা অনেক  টুকরো টুকরো নিরাপদ,নিরুপদ্রব খাঁচা, স্বপ্নময়, আলগোছে আদরে।

একটি বৃত্তের সাথে আরো কোন বৃত্ত অথবা বৃত্তগুলির চুড়ান্ত অকৃতজ্ঞ সঙ্গম, মৃত্যু বা মুক্তি হাতের মুঠোয়।

অন্ধকার এক জানালা থেকে আরেক জানালা বাতাসের জমাট গাঁথুনি,রাগ বিলাবল আগুনে ভালোবাসা।

একদল গৃহপালিত কুকুরের সমবেত গণসঙ্গীতে শান্তি নামে এলোচুলে, দিন রাত্রির তফাৎ মুছে যায়।

সকাল হয়।


Sunday, April 12, 2020

অব্যক্ত কথামালা

সুর্য মধ্যগগনে স্থিত, আরেকটু সঠিকভাবে
বলতে গেলে মনে হয় হেলছে পশ্চিমপানে ।
উন্মুক্ত প্রান্তর, একলা দাড়িয়ে চারিদিক শুন্য
কোথাও কোনোখানে কেউ নেই,আকাশটাও
বড়ো একলা ।

মেঘ নেই ,বাতাস বড়ো শুকনো ,সবইতো দহিত
ঝলসে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে ।একলাই দাড়িয়ে
নির্জনতম কান্নাগুলো শুধুই বাস্পায়িত, সেই
মেঠো মন আগুন হাওয়ায়  সেই পাহাড়ের খোঁজে
আগলখোলা ।

সেই ন্যাংটা ছেলেটা টলোমলো পায়ে সেই গাছটা
খুঁজছিল, যেটা সে নিজের হাতে লাগিয়েছিল ,যাতে
আবার টলোমলো পায়ে একটু আরাম করে যখন  চিতায়
শুতে যাবে তখন যেন কাঠের অভাব না হয় একেবারেই
উড়ানখাটোলা ।

সব শীতলতাই তো একটু আমোদিত রোদ্দুর ফিরে ফিরে
চায়,কিন্তু  যে একলা দাড়িয়ে অন্তহীন উন্মুক্ত প্রান্তরে ,
 জেগে আছেতো ? খানিক আগে তো পালিয়ে মহুয়াবনে
আজলা ভরে মহুয়াফুল গন্ধে আস্বাদনে, ফিরতে তো হবেই
অণ্নিমধুশালা ।

চিল শকুনের দল উড়ছে ,ঠুকরে খাচ্ছে সততা,বিশ্বাস,
তীব্র দাবদাহে পবিত্র প্রত্যাশাহীন নীরব অনুভুতি গুলো
আড়াল খুঁজছে,তীব্রতর না মনে হয় তীব্রতম না পাওয়ার
অনন্ত কাব্যবিলাস। একলাই দাড়িয়ে পথভ্রষ্ট কেউ নেই ,
অব্যক্ত কথামালা ।

Thursday, April 9, 2020

বিশ্বাস, রাখি সযতনে,
 আধারে আলো তুমি পারিজাত।
যেও না থেকো কাছে,
হৃদি মাঝে আসুক না যত আঘাত।

Wednesday, April 8, 2020

পাগলী তুই এলোমেলো, আকাশগঙ্গায় ভৈরবী,
ডুবছি .কাঁদছি অমৄতসুখে ,ভিজে হৄদিজলছবি।
জাগছি  . গলছি ,হারিয়ে যাচ্ছে আমার সবই,
“The winds blow…
The lightning’s fall
The space overflows,
 এতো অস্থির হৃদি মন,সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে,পাগল হারাচ্ছে জীবন।

Tuesday, April 7, 2020

রাতসোহাগ
মৃত্যুকে রাখি ঢেকে , মদির আবছায়ায়,

  মায়া মরিচীকা,  ছেড়াজীবনের চাঁদর,

টুকরো টুকরো কাপড়ে মোড়া গড়াভাঙায়

রঙিন বেপথু আলখাল্লা , কেমন ওস্তাগর?

কত দিন কত বছর যে লাগে মৃত্যুর খুন

লাশকাটা ঘরে ,পোড়া স্বপ্ন আর ক্লান্ত স্বাধীনতা।

দম দেওয়া পুতুল বন্ধ শ্বাস,চলে ফেরে,ভাসে,

আরামকেদারায় চুমুকে অনাহারের ছেঁড়া খাতা।

বিপন্ন বিপ্লবআগুন মহাসিন্ধুর গভীরে অতলে,

দীর্ঘায়ু কাপুরুষে জাগে ক্লীব সুশীতল কামনা।

এলো ধানমাঠে সুযৌবন আড়মোড়া ভাঙে

এটো চা,ভাগে বিড়ি,পুড়ছে মুখোশ , কালোকান্না।

চাইনা চাইনা,ভরপেট ঘুম চাই উদোম বটতলায়
অবসন্ন একলা চড়াই উৎরাই।

Monday, April 6, 2020

আগুনের একেবারে মাঝখানে  এসে দাড়ালে
আর আগুন লাগে না ।
মাঝসমুদ্রে জল খেলা করে
ঢেউ পাগলামো ভোলে মাঝিকে ছাড়েনা  ।

Saturday, April 4, 2020

আমার উঠোন ভরে আঁধার ঝরে পড়ে অন্তরে,
সুখতারা তুই আয়রে কাছে থাকিসনা ঔ সুদুরে ।
মনের মেলায় মায়ার খেলায় পরাণভরে গল্প করি,
হৄদকাননে মধুপবনে বেয়েই চলি অমৃত স্বপনতরী।

জ্যেৎস্না কাঁদে,বন্যা হাসে ,জলঙ্গী চুলে কৃষ্ন ভারে,
দীর্ঘ রাত আমলকী বনে এক আঁধার নামে চুপিসারে।
  
পাখি ডাকুক, ফুল ফুটুক,ওরে আমার
মোমজোছনা থাকো তুমি আরেকটু কাছে।
কানে কানে আপন মনে এই পাগলের
অনেককথা  বেদনব‍্যাথা বলার আছে।


Friday, April 3, 2020


একলা আধার আকাশ জুড়ে নাথ হে তুমি,
কত কথা কানে কানে উন্মুক্ত হৄদিবাতায়ন ।
মুখোশ টেনে ছিড়ি,প্রিয়তম তোমারেই নমি,
উতল হাওয়া,অধরা অশেষ, অনিমেষ নয়ন।

আজ একলা ছাদে বসে তারা গুনতে গুনতে সত্যকামের চোখ দুটো অসীম ক্লান্তিতে জুড়ে আসছে,কোন কিছুতেই আর কিছু যায় আসেনা।
দিন রাত্রির কাব্যের আর অন্ত বলে কিছু নেই।


মনপাগলের  বিচার চলছে। তার পরিনাম ঠিকঠাক । শুধু হেমলক কখন কিভাবে দেওয়া হবে সেটা অনেক ভেবে ঠিক করতে হবে । কিন্ত  পাগলতো কথা শোনেনা । হেমলক আর অমৃতের তফাৎ বোঝেনা । জীবন বড়ো সুন্দর তার কাছে ফুল যে ফুটছে পাখি যে গাইছে। পাগলমন   চলে অন্নপূর্ণার মন্ডপে পুজো হচেছ যেথায় মায়ের । বিচারে তার কি আসে যায়।

পদ্মদিঘীর গহিন টানে মন জাগে সে কোন ভোরে,
অমলতাসে মিলতে চায়, পরাণ কান্দে  মেঘমল্লারে ।
           


দরজা, জানালাগুলো সব ভেঙ্গেচুরে দেওয়ার ঢেকে দিচ্ছে সবটুকু আকাশ। শ্রাবণ একলাই ভিজছে আজ এই পড়ন্তবেলায়। সারাজীবন আকাশ থেকেই ঝরে ঝরে পড়তেই থাকলো।

আজ উদয়বেলায় পাগল মনভরে গল্পমেলায় ভরে ছিল করবীতে অতসীতো কতদিন আসেনা ।কতযে কথামালা । হাসনুহানা মত্ত হলো তালভঙ্গতায় ।নীরব ভোরের ঘুম ভাঙ্গিয়ে পাগলের কানে এলো ঢাকের আওয়াজ ।চড়কের ঝাপ শুরুর সুর ।আজ রাজা হবে ফকির ফকির রাজা ।জীবনের আরেকটা পাতা ঝরার দিন এলো যে ।মাধুকরীতে আজ সারা দিন কাটে মানুষের মন খুজে কত যে মন কত তার রকমফের ।মনপাগল দিনের বিদায়ে যখন আকাশের তারাদের খুজতে বসে ভরাচাদ,পুণি্মায় ভরাযৌবনের গানে তাকে ভিজিয়ে দেয় ভরিয়ে দেয় জীবন এতো যাতনাবিধুর । পাগল আরো পাগলামিতে নিজেকে ভরিয়ে তোলে ।মনপাখি ভোলে তার উড়ান ।

পথের শেষ কোথায় ,পাগল মন কেইবা জানে,
উজানে না ভাটায় , নাও ভাসাই  কোন পানে।
শ্রাবণ হঠাৎ যেন স্বপ্ন ভেঙে চোখ মেলে।

কালচক্র অনন্ত অব্যয়,দিন আসে দিন যায়
জীবন জুড়ে যত অনুভব মেশে ঝরাপাতায়।

প্রখর তপনতাপে মনন চিন্তন সহজিয়ার মেঠো সুর কোথায় যে ভেসে যায় ।নিজেকে আলোকেরবৃত্তে ধরে রাখার কি কঠিন সংগ্রাম । পলাশ শিমুল করবী আর তো চোখে পড়েনা । সবাইতো মুখোসের আড়ালে।একটু যদি বাউল মন অসুর থেকে সুরে ছাতিমের আদরে একটু শীতলপাটির কোমল ছোয়ায় নিজেকে ভেজাতে পারতো ।

Thursday, April 2, 2020

বসত
অনেক সাধে গড়েছি ঘর আপনার
এক দেওয়ালে ইচ্ছানদী,আরেকধারে
ছোট্ট আকাশ,স্বপ্ন পাহাড় অন্যপানে,
বাকিটাতো দরজা জানালা মিলেমিশে
সব একাকার ।

মনভেলাতে ভেসে বেড়াই,হেথায় হোথায়
যেথায় খুশি ।আপন সুরে আপন
ভোরে নিজেই কাঁদি, ইচ্ছে হলে খানিক
হাসি ।আঘাত,বেদনা,যাতনা সবইতো
অরুপ অলংকার ।

ঘরের মাঝে গহিনবন সে মায়াকানন,
আশাতরু যে গল্পগাথে অতসীতে আর
মাধবীলতায়।স্বপনমুলে ,সুখশাখে ওই
আলোছায়ায় আঁধারতলে বাজাই
বাঁশী চৌরাসিয়ার ।

সবুজ সুরে গাই যে গান নীরার
কথায়,নয়নতারায় ।দুগ্গা আরাধনা ,
উপাসনায় আহা পরম ভালোবাসায়।
শিউলিপ্রেম আবিরে ,দখিনা সমীরে
খোলা হৄদয়দুয়ার ।

বাউলানী ঐ মাধুকরীর মোমজোছনা
লুকিয়ে রাখি অন্তরগৄহকোণে।পথ চলি
দিক ভুলি তবু নীরে ফিরি ।মেঘবালিকা
চিত্ত ভেজায় চুপকথায়,শহরবাউল একাই
আকুল ছিন্নতার ।