সিঁদুর রঙিন কান্না আলো, পাগলি আকাশ নববধূ,
একটু চুপি,স্মৃতির ঝাঁপি, দেখতে আমায় দিও শুধু।
একটি কালো কবিতা
পথচলতি পাগলা হাওয়ায় চিতি সাপেরও আড়মোড়া ভাঙে,
নীরবতার একটা কালো কবিতা অন্ধকারেই সাজায় অবনী ।
মৄত্যুতেও শুরু হয় এক নতুন ঝরঝরে অশ্রুত রাগবাহার।
ফোঁসফোসানী শুরু করে চিতি , শিকার অথবা নিজেই শিকারী ।
আমি কে ?এই আধাঁরে কেন ,কালোতেই তো প্রতিবিম্ব সুস্পষ্ট,
কৄষ্নসাগরে ঝাঁপ দেবার আগে অবনী আর কালোচিতি এক আত্মা ।
নিস্তব্দতার কবিতা , আখরমালা সাজে আপন সুরে ফিরে মৄত্যুগহ্বর ,
হেমলক তুই এতো তরল ,এতো তীব্র আবাহন ,বড়ো নিবিড় সুনিবিড় ।
তাপচুল্লীর দরজা খোলে ক্ষনিকতরে, চোখ ধাঁধিয়ে তীব্রছটায় সুতীব্র,
এতো শীতল আবাহন , কৄষ্নসার হরিণ এই তাপে পোড়ে না পুড়েই ছাই ।
দিকহারা নিকস মধুময় প্রেমে অপ্রেমে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে আলিঙ্গনে আঁধার,
অবনী তার উদ্দাম আবেগে বন্ধ করে সব জানালা দরজা সব সব কপাট ।
জেল সেলুলার ,আবেগ অনুভুতি হাতে পায়ে লৌহশৄঙ্খলিত জীবনচেতনা,
কালাপানির ঘুম ভেঙেছে কালোমনে এদোল ওদোল চেনা মুখের ভীড় ।
মহামিছিলে এমন নোনাচোখ, প্রবাহমান কঙ্কালে টঙ্কারে মৄত্যুগীতিকা ।
চোখ বুজে আসে ,মধু আবেশে অন্ধকার তোকে জড়িয়ে মরে বেঁচে ডুব,
কৄষ্ন সমুদ্র মরণে ভেসে চলে জীবনভেলা ।।
হেমন্তের অরণ্যে সেই পোস্টম্যান কোন ছাতিম তলায় গন্ধে মাতাল? আধা সুপার বাঁধা চোখে একপশলা সেই গন্ধটাই চায়,একটু মাতাল, মন্দ কি?বালুকা বেলায় মাদুর পেতে সেই গন্ধে ভিজি, নৌকা গুনি।
আনমনা আকাশ গায়ে জড়িয়ে এই পথ সেই গলি,রক্ত ঝরে পায়ে,হৃদয়েও।বহু বহু দুর থেকে মৃদু আওয়াজ ,ঘন্টি সাইকেলের ভেসে আসে,আসা না যাওয়া? দ্রিম দ্রিম শব্দে মাথায় ঘা মারে অবিন্যস্ত।
যান্ত্রিক পা অভ্যাসজনিত বাধ্য পথে হাঁটতে হাঁটতে এখনও অরণ্যে ,চোখে বিকিকিনি,সব কাজ ফেলে,মুঠো মুঠো বেদনার রোজনামচায়, লেখনে কি নিভৃত যতন?একা তথাকথিত কবিতার চোখে জল।
ঘড়ির মধ্যে সময় অন্বেষ, তারাগুলো নামে,বুকের মাঝখানে আগুন জ্বালে,কোথায় দিকহারানগর?বারবার ফিরি সেই মোড়ে সেই প্ল্যাটফর্মে বা ওভারব্রিজ,তোমার কি আমায় একটু মনে পড়ে?
আমার পাঁচিল ঘেরা টুকরো পৃথিবীতে ভেসে আসে হেমন্তের নিঃশ্বাস।থামা গাড়ী আবার চলতে শুরু করে। হয়তো, হয়তো নয় একেব্বারে একদিন দেখা হবেই,সজনে ফুলের ধুলিশয্যায়,সোদা গন্ধ নিয়ে।
অঝোর অন্য পৃথিবীতে শিমুল,, শিউলি,পলাশ,হাসনুহানা আর জুঁই মায়াবনে,চিঠি খুলে তোমায় পড়ব আনমনা কবিতায়,ঘন্টি বাজবে জোরে, আকাশ,বাতাশ, কবিতা, তুমি, এই ভুমি এক আঁধার ।
স্থবির
আচ্ছা, কোন বাসে উঠি ,পৌছুতে হবে সঠিক ঠিকানায়
দাড়িয়ে আছি এক্সাইড মোড়, ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়েই
কত নম্বর বাস ,মনে আসছেনা কিছুতেই চেনাপথেই ভুলভুলাইয়া
আমি যে এখন কি করি, ওই পাগলটাও তো একটা পা তোলে
আর নামায় ,স্থবির একই জায়গায় ।
দক্ষিণেশ্বরে মাকে প্রনাম,শিবের মাথায় জল গঙ্গাস্নান শুদ্ধমন,
বেলুড়ে তুমি রাম তুমিই কৄষ্ন, মনপ্রাণ তোমা পানে ধায় ।
ফেরার পথে শ্যামবাজার গোলবাড়ি কষামাংস দুটো করে রুটি,
গৄহে পত্নি প্রেমে গদো গদো বাইরে মন এদিক ওদিক চায় ,
একই রুটিন মন ,স্থবির একই জায়গায় ।
ইঁদুর দৌড়, বাঁশে যতই তেল মাখানো থাক নবনব রুপে
ইশ্বরের নামে কত্তা ভজন টিকে তো থাকতে হবেই ।
হলদেটে শেষের কবিতা, ফেসবুক আর হোয়াট্স আপে
অমর হয়ে যায় লেখনী রুপে কি-প্যাডের অক্ষরমালা ।
অচলায়তন ,স্থবির একই জায়গায় ।
কাজের মাসিটা বড়ো বেয়ারা, কামাই করলে চলে ?
ফ্যাশান শো এর আরেন্জমেন্ট, সবাই কন্ট্রিবিউট করবে
অনাথ আশ্রমে দান,সাংবাদিক কুল কেউ বাদ পড়েনিতো ?
এর মাঝে আবার রান্না, দুর একটা ফোন ডোমিনোজ আর
সচিত্র স্ববিজ্ঞাপন , স্থবির একই জায়গায়
সময় অফুরান,
বলতে পারেন বাসের নম্বরটা ??
মাধব আজ ও একলা বালক,
এখনও নদীর ছলাৎ ছলাৎ পাগল করে,একটার পর একটা নৌকা অধরা অন্য পরবাস।
মাধব আজ ও বসে থাকে জারুলতলা,
নদী মাটি দিয়ে অন্ধচোখে গড়ি দুগ্গা,রঙ নেই,চোখ হারায়,আরবার চোখ গড়ি অলীক আলোমাখা।
মাধব আজ ও পথসাথে,পা টলমল,
মরি আবার মরি, কিন্তু বাঁচি,এই বাঁচাই তো সাঁই পরশ, মুখোশ ছিঁড়ে চুরমার করে মুখ,চেনা আলগা হাসি।
মাধব আজ ও ঘৃণা সুরামাতাল, অবহেলা,
আস্টেপিস্টে বাঁধা, কলমিফুলের মুচকি হাসি কেড়ে নেয় চৌমাথায় তোমার একঝলক,চৌরাসিয়া বাঁশী বাজে।
মাধব আজ ও তারাদের ভালোবাসার গল্প বলে,
কাল আবার নৌকা ছলাৎ ছলাৎ ব্যথা বাম হাটু থেকে হৃদয়ের চোরাগলি,টিকে থাকে শুন্য গল্পমালা।
মাধব আজ ও মাদুর দাওয়ার খুঁটিতে হেলান,বিড়ির ধোঁয়ায় মেঘবালিকার আলগা ছোঁয়া,জীবন পালকিদোলে। কাল নিকানো তুলসী তলা,কৃষ্ণপিদিম।
পাগলের এই পথচলা,
গভীর গহিন অরণ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলা, টুকরো টুকরো করে ভেঙে চুর চুর করা।
আপনাকে বিজ্ঞাপিত করা,
নকল বুঁদির গড়ের ভুল রাজা সাজা,
এই যুদ্ধে ক্লান্তিকর বিরতি।
আকাশ মিনারে সাময়িক ভুলবসবাস
অন্তরকথন, খুঁজে ফেরা শিউলি দুগ্গা ,
সেই স্বপ্ন প্রতি রক্তকণিকায়।
ঝরাপথে তোমার ছোঁয়া পলপল,
আধো যতনে তালাবন্দী,
অমৃত দুগ্গা ভালো বাসা।
তুমি অনন্ত,অন্ধ আলোয়,
টুকরো টুকরো করি ভাঙি আপনাকে,
সমর্পণে অঝোর কান্নাধারায় ।
জাগো,জাগো দুগ্গা।
দিক্ হারানো সবুজ তেপান্তর ,
দিদার কাছে ঠাকুরমায়ের ঝুলি।
কেড়ে নিলাম গাছ ,পাখি ,আকাশ, মাটি,
শুধু ভুলভুলাইয়া, ধরিসনা রঙ তুলি।
শিমুলতলায় গুলতি গুলি, লুকোচুরি, গাছের ঝোপ
চু কিতকিত,কুমিরডাঙা , ওপেন টি বায়োস্কোপ ।
বড় ভার ইস্কুলের পড়া সেইতাসের দেশ,
বন্ধ গরাদ কাঁদে, পালায় কিসের উদ্দেশ ।
।।সবই কেড়ে নিলাম,
রাত আধাঁরে কান্না, ওই বালক ভোলানাথ
তবুও বাসযোগ্য পৄথিবীর বোকা স্বপ্নে পাগল মধুকর।।
পুজো পরিক্রমা
বাবা কাশীনাথ,কদিন ভালোই কাটলো বল
সেই বাঘমুন্ডীর পাহাড় কোলে সবুজগ্রাম
মাকে ছেড়ে, শহরের মায়ের মন্ডপ ,
কাঁসিতে বোল তুই ভালোই তুললি বাপধন ।
বাবাগো আমাদের গ্রামে কেন শুধু পিদিম
বান ডাকে আলোর শুধু এই শহরভরে ?
মায়ের সাজের এতো বাহার, দেশগ্রামের
মাকে ,বাবা একটা নতুন শাড়ী কিনে দিস কিন্তু ।
৬৪ বছর,সেই কামারপুকুর,প্রতিবছর আসি ভাই
ব্যাগে খালি এক জলের বোতল, বছর পর বছর
আশ মেটেনা মাগো,তুই জোটাস খাবার,জায়গা শোবার
নবমীর রাতে মল্লিকবাড়ী,ওরা ভোগ ভালোই খাওয়ায় ভরপেট ।
অস্টমীর শেষে সন্ধিপুজা অসুরনিধন ,মহাপুজা
মাগো আমিও মা দোষ কোথায় একটা নয় ,
তেইশজন অসুর আমাকে শতছিন্ন করে সিদুঁরলাল
আমার মরাজীবন সিদুঁরখেলা আর হলোনা মাগো ।
মাকে মন্ডপে আনি আবার ভাসাই গঙ্গা অগভীর,
রোজগার ভালোই আঁধারে আলো কদিন ভালোই ।
শুধু মনকেমন, ছেলে সেই ক্যানিং নদীর ওপার
বড্ড কাঁদছিলো গো, আসছে বছর আবার এসো মা ।
রেশনে চাল ১০ টাকা কেজি, এবারে অনেকটা চলবে অনেকদিন ।
উছলে পড়া আনন্দ, মুঠো ভরা খুশি ,চাল একটু মোটা তবুও
আছড়ে পড়া জীবনে চারপাঁচদিন মায়ের আরাধনা, না ফোঁটা অতসী
আসছে বছর আবার ভরপেট আসিস কিন্তু দশভুজা মা
আমার দুগ্গা, তুই বছরভর পালিয়ে ফেরা, প্রতিদিন প্রতিভোর
মনপিদিম জ্বেলে জ্বলিস অমলধুলোয় ভালোবাসায় একা কান্নায়,
চোখের কোনের কালিতে , গোপন অপ্রকাশে শ্থবির নীরবতায়
জেগে ওঠ মা অসুরনিধনে বোকাস্বপ্নের নিত্য কল্পকল্পনায় ।