পাঁচালী
মৃত মানুষটার চলাফেরা আগোছালো,
চোখে প্রতিবিম্বের এলোপাথাড়ি চলন।
চলতে চলতে কেবলই পিছন ফিরে দেখা,এক অন্তহীন আবছায়া সামনে দাঁড়িয়ে বিদ্রুপের হাসি ছড়ায়।শুন্যর সাথে শুন্য যোগ করে যাপনবেলা অ-সমে এসে থামে।
অব্যক্ত মন কারাগার
কিসের খোঁজ,
জীবন শ্রোত অন্তহীন,
অবিরাম ।
জন অরন্য ,
অহেতুক বিকিকিনি,
ঝরে যায় প্রত্যেকে,
বড় বেশী দাম।
তখন সেই ন্যাঙটো বেলা, বাড়ির পাশেই ধাইমার বাড়ি,নিকোনো দাওয়া, বাঁশের বেড়ার ঘেরাটোপে আমার দিনের অনেকটা কেটে যেতো। দুটি মৃত সন্তান যোগ করলে আমি নবম জন। ভিড়ের চাপে একপেশে সহবাস। হামাগুড়ি জীবন।
তখন এবং এখন।
ক্লান্ত শরীর,
শৄঙ্খলিত মন ।
দেখি,আদুরে রোদ্দুর, সন্ধ্যা নামতেই এসে বসে একলা শ্মশানমন্দিরের মরাচাতালে। সহযাত্রী।ঐ একজায়গাতে মনে হয় আমার মতো চরিত্রহীন মানুষটি একটু স্বাধীন স্বেচ্ছাচারের জায়গা খুঁজে পায়,নীল জ্যোৎস্না।কে যেন সব বাঁধন,আগল দেয় খুলে। শান্তিতে মরি। মৃত মানুষ।
সবার কাছে নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় , শিশুকাল থেকে কাউকেই তো খুশি করতে পারলাম না, আমার না পারা সক্ষমতা,দোষ, স্খলন সবার খাতায় কেবল আঁকিবুঁকি কেটে গেল।
উত্তুরে হাওয়ায় ক্লান্ত ভোরের এজমালি রেওয়াজ।
কলোসিয়াম ভরা দৃষ্টি, দুই টলোমলো পা ভেজে নিষিদ্ধ পল্লীর কেনা বীর্য পতনে।
ওরা দেখছে, হাসছে, সশব্দে।
ঘেন্না নিজেকে, খড়ের চালা ভেজে,পচে,কেন্নো ঝরে টুপটুপ, দাওয়া জুড়ে এখন রূদ্রপলাশ।
উত্তাপহীন সমুদ্রে উথাল পাথালের আনাগোনা। আমার থাকা বা না থাকা পৃথিবীর ঘূর্ণনকে কোনভাবে প্রভাবিত করে না। বৃত্ত বাইরে গেলে ভুলে যায় বৃত্ত গ্রামের বাসিন্দারা, তবু মৃতচলন।
আবছা উদাম আকাশ,
বাতাস কাঁপছে শীতেলা কান্নায়,,
আমি কেন, কোথায় ,
হৃদমাঝারে পানকৌড়ি আদুল গায়।
প্রাইমারীর টালির চাল টিপ টিপ ভিজে বেন্চ,মরা তো প্রতি নিঃশ্বাসে, এরপর আর তো প্রথম বা দ্বিতীয় হওয়া, হলো না কোন জীবন পরীক্ষায়। মাস্টার্সে পন্চম, ওইটুকুই। Obviously স্বপ্নসন্ধানে আমি ভোরের পাখি। আর কিছু পারি বা না পারি।
অ-বোঝা ,
অনিমেষ আকাঙ্ক্ষা,
আকাশ মিনারের খোলা জানালায় নিঃশ্বাস।
নিজের মতো ভাবার স্বাধীনতা নিয়ে গলাকাটা মুরগির মতো কাটিয়ে দেবো মৃতজীবন, কাটিয়ে দেবো, বাঁচিয়ে রাখবো হাজার বছর ভালোবাসার চোখদুটো আমার নাভি কেন্দ্র।নিরাপদ কুঠিবাড়ির বসবাস আমার নয়।
দাঁড়িয়ে আছি একা প্ল্যাটফর্মে,ট্রেন ওড়ায় ধুলো,মুখ ঢাকি তেলচিটে বালিশে।
ঢোল কলমী বনে নিরুদ্বেগ বেহুলা গাঁথে মালা।
সন্ধ্যা আর সকাল মুখোমুখি।
No comments:
Post a Comment