জরাসন্ধ
------- শক্তি চট্টোপাধ্যায়
আমাকে তুই আনলি কেন, ফিরিয়ে নে ।
যে - মুখ অন্ধকারের মতো শীতল, চোখদুটি রিক্ত হ্রদের মতো কৃপণ করুণ, তাকে তোর মায়ের হাতে ছুঁয়ে ফিরিয়ে নিতে বলি । এ - মাঠ আর নয়, ধানের নাড়ায় বিঁধে কাতর হল পা। সেবন্নে শাকের শরীর মাড়িয়ে মাড়িয়ে আমাকে তুই আনলি কেন , ফিরিয়ে নে ।
পচা ধানের গন্ধ, শ্যাওলার গন্ধ, ডুবো জলে তেচোকো মাছের আঁশগন্ধ সব আমার অন্ধকার অনুভবের ঘরে সারি - সারি তোর ভাড়ারের নুনমশলার পাত্র
হ'লো , মা । আমি যখন অনঙ্গ অন্ধকারের হাত দেখি না, পা দেখি না, তখন তোর জরায় ভড় ক'রে এ আমার কোথায় নিয়ে এলি । আমি কখনো অনঙ্গ অন্ধকারের হাত দেখি না, পা দেখি না ।
কোমল বাতাস এলে ভাবি, কাছেই সমুদ্র ! তুই তোর জরার হাতে কঠিন বাঁধন দিস । অর্থ হয়, আমার যা - কিছু আছে তার অন্ধকার নিয়ে নাইতে নামলে সমুদ্র স'রে যাবে শীতল স'রে যাবে মৃত্যু স'রে যাবে ।
তবে হয়তো মৃত্যু প্রসব করেছিস জীবনের ভুলে । অন্ধকার আছি, অন্ধকার থাকবো, বা অন্ধকার হবো ।
আমাকে তুই আনলি কেন, ফিরিয়ে নে ।
______________________________________
প্রনাম কবি, তোমাকে আমার অক্ষম সমর্পণ--
এবড়ো খেবড়োআলের সবুজ ঘাস, লাউডগা বা কালকেউটে প্রাণে ওম এর কামনায়,কেন জীবন?
দাওয়ার আবছা আলোয়, মাটির খুঁটি আঁকড়ে ক্লান্ত বিদ্যধরী প্রসব যন্ত্রণা অনেকটা রূটিনমাফিক।
এলেবেলে পিট্টুখেলা,সাহেব বাগানের ফ্যাকাশে কাগজ ফুলে প্রেমের সংঙ্গা খোঁজা,আজও নিরর্থক পাকা তেলাকুচা র টকটকে তীব্র লাল।
আছি বা না আছি কাটা সুতোর উদাসীন পৃথিবীর কি কিছু যায় আসে? হৃদপিণ্ডের একপাশে প্রশ্নবোধক চিরস্থায়ী চিন্হ।
অন্ধ কবন্ধ আকুল আবেদনে অন্ধকার অন্তকামনা, অপ্রয়োজনীয় ভীড়,কেবল ঢোলকলমী ফুল ডানা মেলে।
হাফ ধরে,পাকাল মাছের ঝলসানো বাণপ্রস্থ,কেন্নোর কিলবিল চলন মহাশুন্যে কালপুরুষ ইশারায় ডাকে।
কেন আসা?
No comments:
Post a Comment