নতুন দিন,তারিখ,সময়,পল.কাল. বছর
দিকহারা অবক্ষয়ে হারায় শোভনসুন্দর,
অকারণে কুহকে এই ফিরে ফিরে দেখা।
নেশাতুরপ্রান চাওয়াপাওয়ার জীবনরেখা।
জীবন জাগুক সুন্দর পৄথিবীর অলীক স্বপ্নে ,আর গারদ ভাঙার গানে , ঠিক তো ?
জীবন অবিরামে বয়ে চলে,
তবু একটা বোধ অনিমেষে...
এমন একটা বৃক্ষ যার ছায়ায়
নীরবতার হয় জন্ম মাঝসমুদ্রে।
এমন সেই আকাশপাখি যার
উড়ান ছায়াময়তার রুগ্নপদ্যে।
সেই জীবন্ত প্রান অহরহ যার
জন্ম মৃত্যু উপত্যকায় নিঃশব্দে।
সেই প্রাপ্তি কামনায় ওই পাগল
শহরবাউল আজ ও মরে কেঁদে।
ভাল্লাগে তোমাকেই
উন্মুক্ত ক্রুশবিদ্ধ বায়ুতে অসহায় রক্তক্ষরণ, তবুও মৃত্যু নির্ভরশীল
এসে যায় একপলকেই কর্মকাবার । বাতাসী এসেছো, থাকো
রক্তিম হৄদপিন্ড খুঁজবেনা আর
থাকোই আর খানিকক্ষন,সুন্দর হয়ে উঠছে পৃথিবী,
অভাব নেই,আবর্জনা পরিস্কার চলছে মহাভারতের কিংবা মানবযুগ
সুচনার সময় কাল থেকেই।চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে অনাহারে ভারাক্রান্ত
সুকান্তের দল, লক্ষ লক্ষ না তার
থেকেও বেশি খোলা আকাশ ঝরে পড়ছে আদুলগায় ।
প্রান্তরের গান সে তো কানামাছি খেলছে সারি সারি দেশলাই বাক্স কিংবা
নিশ্চিন্ত নিরাপদ দিনযাপনের স্বকীয় অহমিকায় ,যান্ত্রিক বাক্য ও সাহিত্যের
সদা আলাপচারিতায় । গানের সুরটি বেশ, বারবার ভরায় বিদগ্ধ মন,
আলপথ কতদিন আশ্রয়হীন চওড়া পিচগলা রাস্তায়।
উলঙ্গ অট্টহাসি পুর্ণচন্দ্রও লজ্জায় ছেড়াশাড়িতে মুখঢাকে,
আমার আলতো চুমু তোমাকেই,নিরাভরণ এই মরুভুমের চাঁদেলা
অট্টহাসিতে ভেজা বোধহীনতার সুন্দরী পাহাড়গুহা ।
লেদমেশিনটা মাথার মধ্যমায় সগর্ব সচল উপস্থিতিতে মন্দ্রাক্রান্তা ।
রাজার রোগে নিরাভরণ বিষন্নআমোদে তুলসীপিদিম ।
রাত আঁধারে
শীত জাগছে মনে, ফুটপাথে,
খোলা আকাশের নীচে চিন্হিত সীমায় ।
অবনী কাঁপছে, দরজাটা কে ভাঙছে?
মৄত্যুহীন বুকটা জাগছে গন্ধে হাসনুহানায়।।
রাত আঁধার জঙ্গলে ও চিলেকোঠায়.......
আর তারই সাথে
আবছা ভোরে
শীতকুয়াসায় হিমায়িত সততা ,বিশ্বাস, সুমন
রোদ উঠলেই শুরু সুবাসে ,সুভাসে বাস্পায়ন ।
বড়ো একপেশে ভয় কাঁপন ধরাচ্ছে ।
ইতি অন্যান্য
মরিচঝাপির নয়া আবাদ ফসল মরা ঘাস,
ঘোলাটে সন্ধ্যায় সেজে উঠেছে রিসর্ট, বাংলায় অনুবাদ করলে মনে হয় একটু নিরূদ্বেগ আশ্রয়ে নিজেকে বিপনণ।ভাঙা রাস্তায় চাঁদোয়া সাজিয়ে সর্বরোগ নিরাময়ের নিলামজারি।
মুঠো মুঠো পলির মাঝে ভাঙা নৌকায় আটকে আছে সবটুকু আবেগ অনুভূতি এমনকি পাগল ভালোবাসাও
পুর্ণগাভি জোয়ারের অক্ষম অপেক্ষায়,সান্ধ্য জলসায় বাধ্যতামুলক অনাবৃত উপস্থিতি।
আমিটাকে , আমার সেই আমিটাকে রম্য সরোবরের পাশের মরা শিমুলগাছে ঝুলিয়ে রাখা , খোলা জানালা দিয়ে উঁকি মারে প্রেতাত্মা,জোনাক আলোয় স্বপ্ন সন্ধানী ভিজে কিশোরী শামুকমেঘ।
প্রাণ ফেরে মরে
যে দিন যায়,ক্ষয়ে কাঁদে ,ফিরে আসে না,
সুখ কিংবা অসুখ পথ ভোলে কোথায় হারায় ।
বছর বছর ভেসেই যায় ক্ষ্যাপা দেয় ডুবসাতাঁর,
সেই যে পাওয়া ভরা জ্যোৎস্নায় পরশপাথর ।
সেই আশ্বিন কোথায় যে হারিয়ে গেলো……
মনোময় অন্ধকার আজ ছাতিম গন্ধে পাগল,
আপনভোলা পথ ছাড়ায় মায়া ইছামতী ডাকে
ভাটিয়ালী মায়াবন ।এখানেই সেই হারিয়ে যাওয়া
ইচ্ছেনদী?দাও দাওনা আমার সেই মুক্তধারা পরশপাথর ।
সেই বনফাগুন মনআগুন কে যে নিভিয়ে ভেজালো……….
কিশোরী প্রেম,কাঁপা হাত পড়তে দেওয়া,লেখাটা
হয়েছে কেমন ? কাল বা পরের দিন অপেক্ষা অন্তহীন ।
অবসর যখন হলো, যে দিন যায় ফিরে আসেনা ।
যখন পড়া হলো. বোঝা গেলো, কোথায় কোথা যে সে ?
এতো জল কে যে অশ্রুনদী বানভাসি অকুলে হারালো…..
আকাশআয়নায় নিশির ডাক, উড়োপ্লেন গুলোর কাঁটাকুটি
মুখটাই অদেখা, তবুও হাঁটাচলা ,হাঁতরে জাগা রাতভোর
বিকলাঙ্গ মন এখনো আঁধারসুরা পানে খোঁজ কোথায়
ঝুলিভরা পিতৄমুখে পুরাণ,উপনিষদ্,আর গোপন কিশোর শীতপ্রেম ।
দড়িতে ঝুলে মৄত প্রাণ কে যে কেন যে নামালো……..
কেন আছেন স্যার?
এই প্রশ্নটা শুনেই ফেললাম।
যে কথাটা সবটুকু নিঃশ্বাসে, ভেঙে পড়া দুটো পায়, বুকের ডানদিকে জ্বলন্ত ব্যাথায়।
ক্লান্ত চৌপায়ায় নীল মশারীর জালে মরা হৃদপিন্ডটাকে আগাপাশতলা বেঁধে রেখে খোলা বা বন্ধ চোখে ঘোলাটে আকাশটাকে দেখতে দেখতে একই প্রশ্ন করে চলেছি।
এতটা পথ ,মোরাম,মেটে,তপ্ত পিচঢালা,অথবা ছায়া আবছায়া আল,একাই,
পাগলমন
মনে শীত পড়ছে, দরজা জানলা বন্ধ কপাট সব,
রুদ্ধ আলো,শৄঙ্খলিত বাতাস, নীরব কান্না কলরব ।
কুয়াসা ঘিরে ধরে কালো চশমায় প্রেতের সারি,
জগদ্দলে শিলায়িত পুরুষ, বন্ধ্যা নিজঃশ্বলা নারী ।
ইচ্ছায় জাগেনা কলম, কি এক মেঘলা অলসতা,
সব ভুলিয়ে শ্মরণে আঁধারে হারায় বোবা কথা ।
বরফে সঙ্কুচিত হাত ও পায়ের আঙুল ,শুধু দরকার তো
দুমুঠো ভাতের স্বপ্নে একটু ছাদ, বাঁচা খামারে পশুর মতো ।
মরে বাঁচা না বেঁচে মরা, বাতাস এতো ভারী এতো বিস্বাদ,
কায়াহীন কাগতাড়ুয়া দাড়িয়ে একা চারধার শুধুই অনাবাদ ।
ভালোবাসা,আবেগ,অনুভুতি,চিন্তন সবই তো বন্ধক ।
মনটাকে কোথায় যে রাখলাম?হায় রে জীবনকুহক..
পাগলরে পাগলমন কোনগহনে ?
আধফাটা চাঁদ,কিপটেমি করে অল্পকল্প আলো ছড়াচ্ছে অসময়ে ফোঁটা হাসনুহানার বুকে।
আছি শুয়ে ভাঙা খাটিয়ায়,মরা আকাশের সাথে,বাতাস নিথর।
জানি, কঠিন তিতকুটে সত্যিটা , তবুও আলসে ভোর থেকে ন্যাড়া দুপুর, ঝিমিয়ে পড়া বিকেল থেকে উইধরা অবসন্ন রাত ,ভাবি হয়তো অন্যরকম কিছু হবে, তুমি সব ফেলে আসবে কাঠচাপা গন্ধ নিয়ে আর নিয়ে একমুঠো বনতুলসী হাসি।
জন্মের পর থেকেই একটু একটু করে মৃত্যু যাপন,কখন যে পুরোপুরি হয়ে গেছি মরা বট, যতোই হাত বাড়াতে চাই, শূন্য,আশা শূন্য, ইচ্ছা শূন্য,এখন মন দিয়ে মাদুর বুনি, আমি তুমি যদি বসি কোনো দিন,যদি তুমি আসো কলমি সবুজ শাড়িতে ,পারি যদি গল্প জুড়তে মেঘরঙা।
রোবট গুলো ভিড় করে আছে প্রতিটি শুন্যশ্থান,
মনন নেই, চেতনা মরূভুমে, ভালো কি সেটাই তো অচিনপুর, ভালোবাসা ভোকাট্টা, কেবল ই নিজেকে দর্পণে দেখা।
কাগতাড়ুয়া তুমি তো পুড়ছো,ভিজছো, এতো আলোয় চোখ তো ঝাপসা,
কফি হাউসটা তো ও বন্ধ্যা,
তুমি চোখ বুজে জাগো কাছিম উন্মাদনায়,
শ্বার্থপর জীবন তো একটাই।
সাদাতে কালোতে বটের তলায় পড়ছে ঝরে ফ্যাকাসে পাতার দল।
ওরা সব্বাই চিৎকার করছে,হাসছে, কাঁদছে,মিশে মিলে চাইছে একাকার হতে।
কোথায়? কেন? জাগা অথবা একপশলা ঘুমিয়ে পড়া?
উত্তর মেলে না।
এলোকেশী মেঘ দুর্মদ , এসো সঙ্গমে আকুলি
এক কুন্তী নদীর বুকে।
প্রতিনিঃশ্বাসে ,ধুসরবর্নমালায় , আকাশ তুলি নিরাশ্রয় ছবি আঁকে।
ভুলভুবনে বন্ধ্যামনে ভিজি মরি
ছেঁড়া সুতো হৃদি হাজার দুয়ারী।
চলি,চলতেই থাকি, হঠাৎ করে বিকেলটা ফুরিয়েই যায়, একটানা অন্ধকার সঙ্গমে লিপ্ত হই,অল্পেতেই হাপিয়ে উঠি।
ওই দিকে তাসের আসরে ঝনঝন আওয়াজ,কি যে হচ্ছে?
প্রিয়সখাহে
প্রিয়সখাহে তোর সাথেই গেছোপ্রেম,
তোর কাছেই উজার আমিটুকু ।
বন্ধু কতদিন তোর সাথে অদেখা
প্রিয়তম বন্ধু তুই যে আমার ।
বাবার হাত ধরে প্রথম পরিচয়,
বোধনের সন্ধ্যা পিদিমের আলোয়,
দুগ্গার চরণ এই ধুলিধরায় ।
চোখের জলের বাঁধ ভেঙে যায় বন্যাধারা
দিন পর দিন ভাসায় ,পালিয়ে হারায় ।
কত সাঁঝবেলায় তুই আমাকে বাঁচিয়ে তোর ছায়ায়,
তোর আলিঙ্গনের ফল্গুভালোবাসায়,কত গোপন কথা
তোর সাথেই ,সকাল আর এই শেষবেলায় রবির আলো
সেই কথা মনে করায়, কত অন্যায় কত ভুলে স্বীকারোক্তি ।
সেই মাঠ, আমের গাছ ,পুকুরে ঝাঁপ,শসার ক্ষেত ,দৌড় দৌড়
বন্ধু কতদিন তোর সাথে দেখা নেই ।
যখন তুই আমাকে পাশে রাখতিস ,অনন্ত অবসর
আজ আর ফুল ফোঁটেনা ,বুনো ঝোপ ,কোথায় কোথায়
বড়ো একা লাগে. তোকে ছুঁতে বড্ডো ইচ্ছা করে,
দেখতে মন লাগে পিদিমের আলোয় ধুপশিখায় ।
ভাঙাচোরা দুখরাশি এই দুর কংক্রিটে জঙ্গলে
ঘন্টার আওয়াজ কানে আসে ,ভাগ করে
সব তোর সাথে জীবনসখাহে,
কানে কানে,প্রিয়সখাহে আমার ভালোবাসা মন্দলাগার
ভালো থাকিস ভালোবেসে
আমার আপন একান্ত প্রেম শিশু ভোলার বেলেরগাছ ।
আজ এই পথভোলা বুড়ো বয়সেও তোকে…….
গহিন গাঙ,ভাঙা তরী, অন্ধ আকাশ, কোথায় পার ?
একলা মাঝি ,উথাল পাথাল , নগ্ন অরূপ আঁধার।
চরৈবতি চরেবতি ,খুঁজে পাগল বাউল মধুকর ।
সাই দে চিত্তপালে অনন্তপরশ,জাগি জীবনভোর ।
একটি কালো কবিতা
পথচলতি পাগলা হাওয়ায় চিতি সাপেরও আড়মোড়া ভাঙে,
নীরবতার একটা কালো কবিতা অন্ধকারেই সাজায় অবনী ।
মৄত্যুতেও শুরু হয় এক নতুন ঝরঝরে অশ্রুত রাগবাহার।
ফোঁসফোসানী শুরু করে চিতি , শিকার অথবা নিজেই শিকারী ।
আমি কে ?এই আধাঁরে কেন ,কালোতেই তো প্রতিবিম্ব সুস্পষ্ট,
কৄষ্নসাগরে ঝাঁপ দেবার আগে অবনী আর কালোচিতি এক আত্মা ।
নিস্তব্দতার কবিতা , আখরমালা সাজে আপন সুরে ফিরে মৄত্যুগহ্বর ,
হেমলক তুই এতো তরল ,এতো তীব্র আবাহন ,বড়ো নিবিড় সুনিবিড় ।
তাপচুল্লীর দরজা খোলে ক্ষনিকতরে, চোখ ধাঁধিয়ে তীব্রছটায় সুতীব্র,
এতো শীতল আবাহন , কৄষ্নসার হরিণ এই তাপে পোড়ে না পুড়েই ছাই ।
দিকহারা নিকস মধুময় প্রেমে অপ্রেমে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে আলিঙ্গনে আঁধার,
অবনী তার উদ্দাম আবেগে বন্ধ করে সব জানালা দরজা সব সব কপাট ।
জেল সেলুলার ,আবেগ অনুভুতি হাতে পায়ে লৌহশৄঙ্খলিত জীবনচেতনা,
কালাপানির ঘুম ভেঙেছে কালোমনে এদোল ওদোল চেনা মুখের ভীড় ।
মহামিছিলে এমন নোনাচোখ, প্রবাহমান কঙ্কালে টঙ্কারে মৄত্যুগীতিকা ।
চোখ বুজে আসে ,মধু আবেশে অন্ধকার তোকে জড়িয়ে মরে বেঁচে ডুব,
কৄষ্ন সমুদ্র মরণে ভেসে চলে জীবনভেলা ।।
মাগো তুমি যে শুন্য বসন, নিরাভরণ ,
আলোর বীনে,পথের ধুলায় তব চরণ
অভিমানী আকাশ বারিধারায় মনভার
আলো দাও মা ঘোচাও অন্তর আঁধার
স্থবির
আচ্ছা, কোন বাসে উঠি ,পৌছুতে হবে সঠিক ঠিকানায়
দাড়িয়ে আছি এক্সাইড মোড়, ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়েই
কত নম্বর বাস ,মনে আসছেনা কিছুতেই চেনাপথেই ভুলভুলাইয়া
আমি যে এখন কি করি, ওই পাগলটাও তো একটা পা তোলে
আর নামায় ,স্থবির একই জায়গায় ।
দক্ষিণেশ্বরে মাকে প্রনাম,শিবের মাথায় জল গঙ্গাস্নান শুদ্ধমন,
বেলুড়ে তুমি রাম তুমিই কৄষ্ন, মনপ্রাণ তোমা পানে ধায় ।
ফেরার পথে শ্যামবাজার গোলবাড়ি কষামাংস দুটো করে রুটি,
গৄহে পত্নি প্রেমে গদো গদো বাইরে মন এদিক ওদিক চায় ,
একই রুটিন মন ,স্থবির একই জায়গায় ।
ইঁদুর দৌড়, বাঁশে যতই তেল মাখানো থাক নবনব রুপে
ইশ্বরের নামে কত্তা ভজন টিকে তো থাকতে হবেই ।
হলদেটে শেষের কবিতা, ফেসবুক আর হোয়াট্স আপে
অমর হয়ে যায় লেখনী রুপে কি-প্যাডের অক্ষরমালা ।
অচলায়তন ,স্থবির একই জায়গায় ।
কাজের মাসিটা বড়ো বেয়ারা, কামাই করলে চলে ?
ফ্যাশান শো এর আরেন্জমেন্ট, সবাই কন্ট্রিবিউট করবে
অনাথ আশ্রমে দান,সাংবাদিক কুল কেউ বাদ পড়েনিতো ?
এর মাঝে আবার রান্না, দুর একটা ফোন ডোমিনোজ আর
সচিত্র স্ববিজ্ঞাপন , স্থবির একই জায়গায়
সময় অফুরান,
বলতে পারেন বাসের নম্বরটা ??
কান্না কেঁপে কেঁপে যায় হাওয়া উথালপাথাল,
ভালোবাসায় জাগে ফিনিক্স তুই ভিজে সকাল ।
বুকের মাঝে হাট বসেছে হরেকরকম বিকিকিনি,
হাকাহাকি ছুটোছুটি ,তারই মাঝে নীল ধুকপুকানি।
ফিরে ফেরা মেঘবালিকা
হিজিবিজি সাদা পাতায় এতো আকিবুকি
ইচ্ছা বারুদগুলো নিভে যায় শহর বৄস্টিঘুম ভেঙেছে ।
মোম গলা আশাগুলো নিভে কাঁদে তীব্র হাওয়ায়,
বুকের আগলে সজোরে ধাক্কা মারে হৄদপিন্ড খুঁজে পাইনা ।
আধারে অঝোরে একলা একলাই ভিজি ,ব্যাঙগুলান
শীতঘুমের প্রস্তুতি ছেড়ে আবার জাগে,কাকে ডাকে
দৌড়ে পালায় জ্বলন্ত ফানুসগুলো আকাশের
এই কোন থেকে ওইধার, আমি ভিজি রাতচানে
চিনেআলোগুলো অনুভুতি হীন জ্বলে জ্বলতেই থাকে
বাজিগানে মদির নীরব অন্ধপেয়ালা খানখান,
ভালোবাসা মুখ ফিরিয়ে আগাছাভরা সাধের বাগান ।
বোঝা অবোঝা নাবোঝা গাথামালায়,চোখের জল
মেঘবালিকার ছোয়ায় হিমেল ছোয়ায় বরফ জমাট,
একলা ভিজি অথৈহৄদয় ভিজে আগুন হাহাকারে ।
মেঘ কাটে ,আলো হাসে,
আকাশ জুড়ে আহিরভৈরব।
মেঘবালিকা নীড়ে ফেরে,
ভেসে আসে পাখির কলরব।
আশা ,আনন্দ, ভালোবাসা,
জীবনের অন্তহীন অতুল বৈভব ।
কতটা নোয়ালে মাথা ধুলোয় মেশা যায়,
পোড়ালে নিজেকে কতটা সুমনে কবির হওয়া যায়
কতটা জীবন খোয়ালে হাসিতে অমলতাস
It was 2015
Congrats ,Pinaki & Dipankar for getting the Dakseva Award, Proud to be member of room no. 706
It is 2019
Congrats, Anup,for getting Dakseva Award,, অভিনন্দন, ডাকবিভাগের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসার এক স্বীকৃতি।
Proud to have worked with you in room no 706 once upon a time.
মেঘ কাটে ,আলো হাসে,
আকাশ জুড়ে আহিরভৈরব।
মেঘবালিকা নীড়ে ফেরে,
ভেসে আসে পাখির কলরব।
আশা ,আনন্দ, ভালোবাসা,
জীবনের অন্তহীন অতুল বৈভব ।
পারছিনা, ছুঁয়ে দেখতে তোমায় আকাশ, অসহায় বিকেলের চৌকাঠে বৃহন্নলা সন্ধান।
তুমি এখন কোথায়? সাড়া যে পাইনে কত কত কাল,লুকিয়েছো হয়তো বা শহীদ মিনারের চিলতে বারান্দায় নয়তো ইছামতীর নরম বুকে।
আমি কিন্তু ভাঙা চোখে এখন ও জেগে থাকি কচি নিমফুলের আলগা সবুজে,অসহায়তার শিউলি পথে।
পুজো পরিক্রমা
বাবা কাশীনাথ,কদিন ভালোই কাটলো বল
সেই বাঘমুন্ডীর পাহাড় কোলে সবুজগ্রাম
মাকে ছেড়ে, শহরের মায়ের মন্ডপ ,
কাঁসিতে বোল তুই ভালোই তুললি বাপধন ।
বাবাগো আমাদের গ্রামে কেন শুধু পিদিম
বান ডাকে আলোর শুধু এই শহরভরে ?
মায়ের সাজের এতো বাহার, দেশগ্রামের
মাকে ,বাবা একটা নতুন শাড়ী কিনে দিস কিন্তু ।
৬৪ বছর,সেই কামারপুকুর,প্রতিবছর আসি ভাই
ব্যাগে খালি এক জলের বোতল, বছর পর বছর
আশ মেটেনা মাগো,তুই জোটাস খাবার,জায়গা শোবার
নবমীর রাতে মল্লিকবাড়ী,ওরা ভোগ ভালোই খাওয়ায় ভরপেট ।
অস্টমীর শেষে সন্ধিপুজা অসুরনিধন ,মহাপুজা
মাগো আমিও মা দোষ কোথায় একটা নয় ,
তেইশজন অসুর আমাকে শতছিন্ন করে সিদুঁরলাল
আমার মরাজীবন সিদুঁরখেলা আর হলোনা মাগো ।
মাকে মন্ডপে আনি আবার ভাসাই গঙ্গা অগভীর,
রোজগার ভালোই আঁধারে আলো কদিন ভালোই ।
শুধু মনকেমন, ছেলে সেই ক্যানিং নদীর ওপার
বড্ড কাঁদছিলো গো, আসছে বছর আবার এসো মা ।
রেশনে চাল ১০ টাকা কেজি, এবারে অনেকটা চলবে অনেকদিন ।
উছলে পড়া আনন্দ, মুঠো ভরা খুশি ,চাল একটু মোটা তবুও
আছড়ে পড়া জীবনে চারপাঁচদিন মায়ের আরাধনা, না ফোঁটা অতসী
আসছে বছর আবার ভরপেট আসিস কিন্তু দশভুজা মা
আমার দুগ্গা, তুই বছরভর পালিয়ে ফেরা, প্রতিদিন প্রতিভোর
মনপিদিম জ্বেলে জ্বলিস অমলধুলোয় ভালোবাসায় একা কান্নায়,
চোখের কোনের কালিতে , গোপন অপ্রকাশে শ্থবির নীরবতায়
জেগে ওঠ মা অসুরনিধনে বোকাস্বপ্নের নিত্য কল্পকল্পনায় ।
মা মাগো
ভাঙা চশমা ঝাপসা চোখ ,সব মানুষের মুখগুলো
কেন যেন এক হয়ে যায়, নামগুলোও ভুলে যাই ।
এতো সু্ন্দর সুন্দর সব চলমান চিৎছবি ,খাই
আঁচার দিয়ে ছাতু , লেকরোডের বলরাম শেঠকে ভুলে
পেট আইঢাই করা অবাক অবাক জলপান ।
সমাপতন না মানবিক অধঃপতন জানো কি ?
কালোয়ারের দোকানে মা হংসেশ্বরীর পুজা,
লাইন দিয়ে অনাহার খিঁচুরীতে ভীড় থালাবাটির ।
সব মানুষের মুখগুলো কেন যেন এক হয়ে যায়,
পিজ্জার বাক্সোর সাথে একই ডাস্টবিনে
এঁটো খিঁচুরীর থালা কৄষ্নকালো, একান্ত গোপনে ।
খয়েরী, কালো ,সাদা রেসের মাঠে দৌড়ঘোড়া
মুখগুলো কেন জানি সব এক, দড়ি দিয়ে বাঁধা
দৌড় দৌড় বাঁচা ,অক্ষম একটাই গুলি ,
নতুন আরেকটা,তোকেই নামাব নতুন রেস
বাড়ি, গাড়ি, টাকা, কেনা প্রেম, হুইস্কি ,
রোদে পুড়ে একলা বড়ো ক্লান্ত রঙ পুড়ে যায়
আরেকটু ভানুমতীর পাহাড় দেখা ,আধাঁরে ঢাকা
একটুকরো স্বপ্ন, সাতসকালেই লম্বা লাইন.
যন্ত্রনিয়ন্ত্রিত জীবনজলেরও কিয়স্ক
জানলায় ফুলেল মাপসই ঢাকা আলো
পাখাটা ঘুরছেই,মনগুলো সব এক হষে শোকগাঁথা
আধাঁরনীল আকাশের একফালি চাঁদে,
তারাগুলো যেন একইরকম মিটমিট ।
অতীত, আজ, ভবিষ্যতের একসাথে পংক্তিভোজন ।
বুকের ডান বা মাঝঘেঁষে মিটিমিটি ব্যাথা,
অফিস টাইম একই ভিড় সব ট্রেন ওঠা দুস্কর,
আমার দুগ্গার একই একলা লড়াই, অনিমেষ, অফুরাণ
সব স্বপ্নগুলো মিলেমিশে একাকার আকাশের তারামালায়,
অন্তসলিলা, আবাহন, বোধণ, পুজন ,প্রতিপল জীবনভোর
ফুটপাথের ছেঁড়া দুগ্গা ,ইসরাত, লঙ্কেশ,মালালা,মহাস্বেতা,
ঝাপসা চোখে সব মুখই যেন আমার একান্ত আপনার দুগ্গার,
পুজোতো.. একটু মানুষ করো মা মাগো মৄণ্ময়ী নাকি চিণ্ময়ী ।
পেসমেকার
প্রতিদিন এই পথেই তো যেতো সেজেগুজে,
এখনো যায় কিন্তু বড়ো ক্লান্ত পথচলা ।
সেই আগুন ছাই হয়ে ধিকি ধিকি শুধু পোড়ে মরে
ছোট ছোট সুখগুলো ,যেন অসুখে বন্যাধারায় দিকহারা ।
ওই যে সুপুরীগাছের মাথায় একলা ফড়িংটা
ইতিউতি তাকায়,আমিও মনে গাছফড়িং
উড়ছি একলা ডানায়,দেশলাই কাঠির ফুস প্রাণ ,
আচ্ছা এই বছরদুই মেয়েটাকেও তো ছিড়ে ফেললো ।
শুধু বাঁচা আর একলা কেঁদে মরা আর নিজেকে
প্রমান করার অন্তহীন অপচেষ্টা,পুরো ছেড়া তার
কেন মরার জন্য এতো বাঁচা, বোবা আর কালা
বোধ ভাসায় গঙ্গায়, কেউ তো ফেলেনা চোখের জল ।
কত শত বছরের পুরোনো উটির সেই পামের সারি ,
তোমরা কি বৈঠকখানা বাজারের ওই মেয়েটার গন্ধ পাও ?
অনুভবে তার কান্না ,গান ,নিজের থেকে পালিয়ে ফেরা ,
দেখতে পাও নাকি তোমরাও একলাদলে অভিশাপের দৄঢ়মুল ?
হৄদপিন্ড গুলো তো স্হবির ,চলতে চায়না,জগদ্দল
পেসমেকার দরকার তো আমাদের সব্বার,আগুন
ঘোলাটে আকাশ, নীল নেই ,সবুজ কোথায়.বড্ড শীত
কান্না জমাট বন্ধ কপাট ,ঘড়ি টিকটিক, টিকটিক,থেমে থাকেনা
তাসের দেশ ,একই ছবি ফেরে ফিরে ঘুরে, অথৈ দামোদর ,
দিক হীন জীবনে চাওয়া পাওয়ার গুলিয়ে যাওয়া ছেড়া খাতা ।
দিন আর রাত চক্রাকার ,ভাঙা মন, পৄথিবী ঘুরছে ,
আমরা ঘুরছি জিতেই মরতে হবে ,ওই মেয়েটি আরও শ্থুলকায়া ।
আগুন পাখি তোর ও একটু ইচ্ছে জাগে বৃষ্টি হতে, শালুক বনে স্বেতপদ্ম হয়ে ভরে তোল মনভুবন।
পথ জুড়ে দিকশুন্য ঝরা পাতার দল ,স্বপ্নগুলো একে একে আক্রান্ত ঘূর্ণিঝড়ে।
বেঁচে ওঠ,সুরে ধর একতারা,মরণকে দুরে রাখি সরিয়ে তোর মাঝে দেখার এক আকাশ জোনাকসাধ।
ছোট ছোট ভালোবাসা মুঠোয় ড়রে কুলুঙ্গি সাজাই,পিদিম জ্বেলে বসি হিসেবে,শুন্যে সমাপন।
কাঁদিস নে, অস্তদিঘীতে অগাধ জল , পানসি বেয়ে চল এগিয়ে, দীপাবলির আঁধার গড়ে।
দুচোখে চৌরাসিয়া সানাই বাজাই,এই অন্ধ মরামানুষটা তোর সাথেই হলুদ সবুজ বনে হারিয়ে ফিরে পাই আমার চড়ুই ভালোবাসা।
কাঁদিস নে।
জুতোটা ছিড়েছে ,জামাটাও,
ঘুণ সেতো চোখেও ঝাপটাচ্ছে।
মন তুই তবু এখনও জাগিস,
তাকালেই গরাদলোহায় মরচে।
জীবন মৃত্যু সত্যিই কি পায়ের ভৃত্য ,
অবস্থা হে ভগবান, বেজায় সঙ্গীন।
চলছি, লিখছি আজকের পাঁচালী,
কাল কি আছে?ছোঁয়াচে চলাচলি।
আছি ভালো।
রক্তচাঁদ
আমার রাত আকাশে রক্ত লাল আধখানা চাঁদ
আয় তোর সাথে প্রেমে অপ্রেমে হই আকুল ।
তুই আমাকে বড়ো করিস অশেষ, ছায়াময়ী
আবেগের মোহর, রবিছ্ছায়ায় চোখে সুখপাখী ,
আদরে ভরে বড়ো আপন ,স্বপ্নিল চাঁদ তুই ।
হৄদয় ভরে মৄত্যুর সাথে জীবনের অমোঘ আলিঙ্গনে
পান করি আবেশে , মধুর বড়ো নীল এই মিলন ।
অসুরে জোড়ে,সুরে আপন মীড়ে , আমায় নিয়ে চাঁদ
পাগলী তুই কুরচি ফুল ,আমার গালে কপাল ভরে এতো
আদর এই ছুয়ে পাওয়া সব ভুলে কি পাগলামি ,
প্রতি পলে অনেক বয়সের রকমফেরে
আমাকে নতুন করে এতো ভাবে চেনাও ,
ভালোবাসাও ভালোবাসাকে, এই ঝরা বেলায় নিসংকোচে,
রক্ত চাঁদে এতো গভীর নিবিঢ় কাছে পাওয়া,
সেই তালসারির আড়ালে লুকোচুরি ।
চির আবেগ পাওয়া মজা কানানদী,
গান শোনায় তিরতির বন্যাপাগল হাসিতে ,
ভাঙা বাঁশির কান্নায় আকাশের তারাদের খুজে ফেরে ।
আধেক হাসি আর কান্না ভরা অকেজো বেকার মন ,
অপ্রয়োজনীয় ভীড় বাড়ানো মানুষটিকে,
ও পাগলভোলা ও আমার আধখানা রক্তচাঁদ ।
সকাল যেন হারিয়ে পাই উদাস আাকুল
ভুবনডাঙার মাঠ ভরিয়ে পাগলপারা ,
ভাঙা উঠোনে তুলসী তলায় আলোপিদিমে,
নেশায় ভরা আমার আধার আলোয় হাসা
তুই অতসীপ্রেম ওরে আমার রক্তচাঁদ ।।
। আলোআধাঁরে সুসকালে অনন্ত জীবন ।
রাত আধাঁর নীরবে একলা কাঁদে,
ভোরের আগমনীর বিষন্ন সংবাদে।
নবআশায় জাগে পাখী,ফোটে ফুল,
এই কুল ভাঙে ,গড়ে ওঠে ওই কুল।
জীবনের আরেকটা পাতা ঝরার দিন এলো যে,
মন কাঁদে রোহিঙ্গা দেবশিশু কিছু কি খেয়েছিস ?
গাছের ফল পঁচা জল, পুলিসের মার,
এই আঙ্কা, অতীতও একদিন পালিয়ে পুড়েছিল ,
পোড়া ঘর,পোড়া বই বেঁচে শালগ্রাম,শ্মৄতি ,
ছোট্ট শহর, রেঙ্গুন, পিউ ,দিক হারানো আাখের খেত ।
বেঁচে মরে আছি ,তোর সাথে মিলি কোন অবসরে,
ভালো থাকরে ।
।।তবুও শুভসকাল ।।
শিমুল ওড়াও তোমার শ্বেত চেতনা, কতদিন যে দেখিনে,
তুমি কতদূর, কোন সে অচীনপুর,পথ কোথায় কে জানে।
কামনায় সুচেতনা
এইদিন সেইদিন, প্রতিদিন ,কুপির আলোয়
ভাঙা বেন্চে মন পোড়ে, সোহাগী লালে চা,
উঠোনমাদুরে আকাশগাথা জোনাকতারায়
কানাগলি, তুমি,আমি,খয়ে খয়ে মরাখাচা।
আজ সকালে হঠাৎ মেঘবালিকা ডাকে,
আকাশ কাঁদে ঝর ঝর ঝর ঝর ।
এক বুক বেদন বাঁশি বয়ে হারায়,
ঘুম ভাঙে, জাগে মনপাগল সেই মধুকর ।
মা গৌরী
আছি অপার আয়োজনে, মা আসছেন করতে হবে আবাহন,
তুমি তো শিবের সাধিকে ,তোমার পুজা,
তোমাকে তোমারই শরণ্যে ত্রম্বকে গৌরী নারায়ণী নমস্তুতে ।
তবু শ্রাবন্তী দুগ্গা হলিনা,চলে গেলি,গৌরী মা তোমাকেও আমরা
লঙ্কাসুরের দল কোন অথৈ জলে ভাসিয়ে দিলাম,পুজো তো
মাকে করতেই হবে, বিপুল বিপুল আয়োজনে মা তোমায়,
,কোটি টাকার সোনার শাড়ি পরাব মা,এসি গাড়িতে বসে সিরাজের
বিরিয়ানি আর গোলবাড়ির কসা মাংস খেতে খেতে তোমায় মা
প্রণামে ভরবো,ম্যাডক্স স্কোয়ারে ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে তরল করে মা
তোমার কল্পচিত্র আঁকবো ,গৌরী মা তোমারই পুজায় আবাহনে
বিপুলা পৃথিবী, তোমায় সাজাব যতনে গৌরী মা ।
আসবি আর ভেসেই চলে যাবি গঙ্গায় বা কোন আরবসাগরে
আমরাই দেবো ভাসিয়ে চোখের জলে।
এই পৃথিবী, এই বিপুলা পৃথিবী ,সত্যিই তুমি পৃথুলা ।।
জীবন মানে একলা চলা,
মনরে তোর জানলা খোলা ।
একটু চলা একটু পাশে,
দিন ভরে যায় সেই সুবাসে।
মনপাগলের এই কথামালা,
দুখসাগরে সুখের ভেলা।
চল ভেসে পার অরুপ সাগর,
আবার সকাল নতুন ভোর।
চলরে জীবনপথে চল মধুকর,
অমৄতলোকে, যুগ থেকে যুগান্তর ।
।সব্বার একমুঠো সুখের কামনায় শুভসকাল ।
সুশান্তপ্রেম হেসোনা
সুবোধদা, অন্ধ চোখেও জাগে ভালোবাসা,
মারণঝড়ে ভাঙেযখন জীবন গড়ার আশা।
মুক্তঅঙ্গন অযতন ভরে বুনোলতা আগাছায়,
বুলবুলি ও তুলতুলি , হেসেই মরে আদুল গায়।
আকাশ টা যখন নিরুদ্দেশে যায় হারিয়ে,
ভালোবাসাই দেয় নিসঙ্কোচ হাত বাড়িয়ে।
ভাঙাবাড়ি. ছাদ, কার্নিশ জুড়ে নয়নতারা,
গঙ্গাফড়িং একলা অবুঝ ,ছৌ নাচের মহড়া।
দরজাগুলো সব বন্ধ যখন নিষেধ প্রবেশে,
তুমি ওগো স্বপ্ন ভালোবাসা দাড়াও হেসে।
মেঘবালিকা লুকিয়ে ভেজায় শহিদমিনার,
বয়সের সমানুপাতে বাড়ে প্রেম পাজি নচ্ছার ।
দৄষ্টি যখন ঝাপসা এবং দুই পা ওহ টলমল,
পানকৌড়ি ভালোবাসা সত্যি অথৈ অতল।
তেলিনিপাড়া ঘাটে ইলিশ কেন,কিসের লাফ?
গুনীজন সুধীমন, ভালোবাসায় সবটাই মাফ।
https://satishacharya2018.blogspot.com
পাগলমন মরেও চায় বাঁচতে,
হারায় তবু চায় ফিরে পেতে।
পদ্মপাতায় টলমল,
আশাটুকুই সম্বল।
কড়া নাড়ি
মাধুকরী।
দৃষ্টি
বৃষ্টি।
ঝরা পাতায় পথের ধুলায় , তবু নতুন করে ভাবি,
আঁকি আলো ,আশা আর ভালোবাসার জলছবি ।
আকাশ খুঁজি উদাসীন সবুজে,নিঃশ্বাসে কানামাছি,
বন্দীবৃত্তে আলগাবাতাস, তুমি আছো, আমি আছি।
লুকিয়েই থাকি, সবকিছু শুকিয়ে যায়,রোজদিন একপথে তাই আর আসি, ভেঙেচুরে ফেলে ,হ্যা নিজেকেই ভেঙে একটা গোলাপী চিতা সাজাবো, তুলে আনবো হলুদ সবুজ সব বুনো ফুল,মালা গাঁথবো,একটু ঘুমিয়ে নেবো।
তারপর
সময় যে তুই কোথায় পালাস,কোন আকাশের নিরুদ্দেশে,
আমায় বুঝি গেছিস ভুলে ,সকাল বলে একটু হেসে ।
দুপুর ডাকে ,বিকেল ডাকে ,অঝোর সুরে অবুঝ ধারায়,
পাগল বাঁধা শীত আর তাপনিয়ন্ত্রিত ঘরের মায়ায় ।
সন্ধ্যা অকপট বলে একটু মিলি আয় আঁধার সাগরে,
ক্লান্ত আমি ,শ্রান্ত আমি ,দৌড়ে ফিরি আপণ নীড়ে ।
জীবন খাতায় আজ দিনশেষের প্রান্তসীমায়
মা তুমি, তুমি মা ,অপমান আর বর্জনের নিত্য পাওয়া নিয়েও
এনেছো আমায় এই বিপুলা ধরণী মাঝে অপার মায়ায় ।
জাগো অন্তরে জাগো ,দুর করো মা মনের আধার,
আলো দাও ,সকাল হোক পাখির ডাকে সবুজ পাতায় ।
।।অন্ধ এই চিত্ত জাগরনের আশায় ।।
ভুল মানুষের অরণ্য,আকাশমন তুই মেঘলা ,
কায়া যায় ভিজে বারিধারায় , কিন্তু ছায়া ।
অন্তর ভরে এতো কালি ,বৄষ্টি আয় এক পশলা ,
ভিজে যাক,সিক্ত হোক,রিক্ত হোক এ গান গাওয়া ।
একাই বসে থাকি, সকাল দুপুর রাত, আসবে কি তুমি?
আমি আর একা প্ল্যাটফর্ম।
তফাৎ যাও ডাক ভাসে,সরতে সরতে শামুকের খোলায়
অসহায় ভাঙা হৃদয়,চিতা তো সাজানোই,ও কুলের নীলমাধব ডাকে,কাল তুমি কি মনে রাখবে?
এক মুঠো অভিমান, বুক ভরা বেদনা,
তবু বাঁচি পলে পলে একটাই জীবন ।
ঝাপসা চোখ,ক্লান্তি অমোঘ,কিসের খোঁজ,
পথ কোথায় ওরে আমার পাগল মন ।
অবিরাম লড়াই মনজঙ্গলে ,দুঃখনদে,
আলো খুজি নতুন ভোরে নিয়ত ,অনুক্ষন ।
।।সুপ্রভাত ।।
মানব সাগরে জীবন যখন একেবারেই একা,
বেদন, রোদন , ভেঙে চুরে যাওয়া ,দুখপাখী করে দেখা ।
তবু নিয়ত আধার শেষে সকাল খোঁজে নতুন আলো ।
প্রাণসখা হে জাগাও অন্তর ঘোচাও আমার সকল কালো ।
।। সুদিন সারাদিন ।।
মনে হয়না একপাও ঢোলকলমী সবুজ ঠেলে পেরেছি এগোতে,
পদ্মপাতার একপশলা,
আজ ও কেবল নোনাকান্নার আশ্বাস, ভেসে ওঠে বারবার পানকৌড়ি মন।
সেই আকাশটাকে টেনেহিঁচড়ে আদুল উঠোনে নিয়ে জোর করে বসিয়ে রাখা।
বদ্যিপুকুরে জল মরারক্তের চেয়েও কালো নিকষ,
এইখানেই পদ্মগোখরো বাসা বাঁধে, ভালোবাসে পালানভরা নীলাক্ত দুধে।
ঝরে পড়া বয়স্ক পাতা আর ঘাসফড়িং এর গল্প যায় ভেঙে।
জলছবি সেই তুমিই কড়া চুরুটের ভাঙা ধোঁয়ায়,জোনাক আলোর অনবরত ভিজে উঁকি ঝুঁকি।
ভাঙা খাটিয়ায় বসে তবু মালকোষ, কার্নিশে ফুটছে নয়নতারা।
দেব - ব্রতকথা
আজ বাইশে অগাস্ট। পড়ার টেবিলে সারাটা বছর অক্লান্ত দাঁড়িয়ে থাকা কোনো এক ছবি ছাপিয়ে আরও ছবিদের পুনঃ প্রকাশদিন । ছবি মানে দৃশ্য , মানে সেপিয়া স্মৃতিবৃষ্টি । নস্টালজিয়া। যেমন- রাত সাড়ে তিনটের নিশুত প্রহর - রাসবিহারী এভেন্যুয়ের এক অপ্রশস্ত সবুজ শেওলা গলির শেষে ঘুপচি ঘর - টেবিলের ওপর ওষুধের শিশি সরানোর শিরশিরানি - হামানদিস্তায় পান চেঁচার অস্ফুট শব্দ – নিস্তব্ধতা-প্রস্ফুটনের আগের মুহূর্ত - মালতীলতার হুলুস্থুলু - হারমোনিয়ামের ঝংকার - হৃদ মাঝারে সুর আগুনে রবি তপস্যা - নিরাশার সমুদ্র ছেড়ে পালতোলা পাখা - গ্রন্ডিগ মেশিনের মহাকাল স্পুল ঘুরছেন - দেবব্রত বিশ্বাস গাইছেন - চারা গাছ পুঁতছেন - রেকর্ড করছেন - যত্নে জল দিচ্ছেন - ভবিষ্যৎ গড়ছেন। যেমন ছাতা মাথায় ওই জীবন সায়াহ্নে পৌঁছানো অবসরি লোকটা : আহা কি নিষ্ঠায়, বিশ্বাসে গড়া - গাঁথনি , ঢালাই ভিজিয়ে দিচ্ছেন জলে। উত্তরাধিকারীরা - অনুসূয়া ,দীপকেরা থাকবে , বাঁচবে , বিপন্ন বিস্ময়ে খুঁজে পাবে আরো কিছু প্রাণের আরাম ছাতিম বিরাম আরও কিছু শিল্পী শ্রী দেবব্রত বিশ্বাসের গান। প্রতিবাদের স্লোগান !
'এক হাতে ওর কৃপাণ আছে, আর - এক হাতে হার/ও যে ভেঙেছে তোর দ্বার। / আসে নি ও ভিক্ষা নিতে , না না না- লড়াই করে নেবে জিতে / পরানটি তোমার ।
'কি বললেন - স্লোগান'?
'প্রতিবাদের স্লোগান। ওঁর একেকটি গান একেকটি প্রতিবাদের ভাষা , একেকটি প্রতিবাদের আগুন। নেমেসিস্। পঁচা ফুচকা , ডিজাইনার পাঞ্জাবি, জাবর কাটা , কবিগুরু সংস্কৃতির বিরুদ্ধে বারুদে ইস্তাহার।'
বলতে বলতে , মঞ্চ জুড়ে শত সূর্যের আচমকা ফেড ইন। বিরাট ওয়াইড এঙ্গেলে অনেক গুলো দেবব্রতর গুরুগম্ভীর, শতদল অনুভবে প্রস্ফুটিত কোরাস। ভালোবাসা,সূর্য আর তারাদের নাচিয়ে তোলার অনুরণ।
' না না না না না, মানব না , মানব না।'
'নবজীবনের গান।'
'দারুন অগ্নিবাণ ।'
'বটুকবাবুর স্মৃতিচারণ, 'লিখন সমগ্র - ১ ' :
একদিন দেখলাম মৃত্যু - অমৃতের সন্তানরা মরছে , যেন পোকামাকড়। মা মরে পড়ে আছে। তার স্তন ধরে অবোধ ক্ষুধার্ত শিশু টানাটানি করছে আর হেঁচকি তুলে কাঁদছে। এর প্রচন্ড অভিঘাত আমার গোটা অস্তিত্বকে কাঁপিয়ে দিলো। আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম - না , না , না। অস্থির পায়ে দৌড়তে দৌড়তে হেঁটে চলেছি আর মনে মনে বলছি - উই ওন্ট আলাউ পিপল টু ডাই। মানুষের তৈরী এই দুর্ভিক্ষ মানব না , প্রতিরোধ করবো , উত্তীর্ণ হবো। হাত মুঠি করে আবার বলে উঠলাম - না না না। এই হলো শুরু। জর্জের ট্রায়াঙ্গুলার পার্কের বাড়িতে হারমোনিয়াম আর ধার করা কাগজ নিয়ে বসে গেলাম। সুর আর কথা , মনের বেদনা ও যন্ত্রণার রুদ্ধ উৎসমুখ থেকে ঝর্ণার মতো বেরিয়ে এলো।‘
রাজার দরবার থেকে দরবারী কানাড়া নেমে এলো মানুষের দরবারে। শুরু হলো নবজীবনের গান। । মানুষের জীবন-সংঘর্ষের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে ,গামছা বেঁধে গলায় হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে সহযাত্রী ,সংগ্রামী শিল্পী দেবব্রত বিশ্বাসের গান। প্রতিবাদের স্লোগান।
এস মুক্ত করো , মুক্ত অন্ধকারের এই দ্বার/ এস শিল্পী , এস বিশ্বকর্মা , এস স্রষ্টা ,/ রূপ-রস-মন্ত্রদ্রষ্টা। / ছিন্ন করো, ছিন্ন করো বন্ধনের এই অন্ধকার।
১৯৪৩- ৪৪ সাল। 'পথে পথে মৃত্যুর শঙ্কা '। বাঙালির সাংকৃতিক ছাদ ফুটো করে রবীন্দ্রনাথ চলে গেছেন। হেমন্ত মুখার্জি প্রথম গান রেকর্ড করছেন।রংপুরের শিল্পী বিনয় রায় গাইছেন - তোমার কাস্তেটারে / জোরে দিও শান / কৃষাণ ভাইরে। 'সোনার তরী' নয় 'মধুবংশীর গলি'র' পাণ্ডুলিপি , প্রত্যয়ের দ্বীপ জ্বেলে শম্ভূ স্বরে উচ্চারিত হচ্ছে হাঠে -মাঠে শত-সহস্র রাজনৈতিক সভায়। সঙ্গী বলতে - কবি এবং রবিন মজুমদার। বিজন ভট্টাচার্য ,ভারতীয় ভাষায় প্রথম গণনাটক 'নবান্ন' লিখছেন। এবং দেবব্রত বিশ্বাস , রবীন্দ্রনাথের গানের বিকৃত খোকন মার্কা গা এলানো , ধরো ধরো ভাব ঘুচিয়ে বাংলাদেশের মাঠে ঘাটে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তার দৃপ্ত সারাৎসার। সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান।
১৯৪৩- ৪৪ সাল। উপদ্রুত রাস্তায় নামলো মোহিত ব্যানার্জির উত্তাল বাংলা তর্জমা 'জাগো জাগো জাগো সর্বহারা'। বেরুলো পার্টির সাংস্কৃতিক ফ্রান্টের প্রধান ফর্মুলেটার সাধারণ সম্পাদক পি সি জোশির ফরমান : নিজেকে সশস্ত্র করো। ভোঁতা বেয়োনেট বা ভাঙা ব্যারেলে কি কাজ হবে ?' উচ্চারিত হলো পার্টির নির্দেশ - শিল্পীদের অলরাউন্ডার হতে হবে। নাচ -গান - বাজনা - আবৃত্তি - অভিনয় , সবই কিছু কিছু শিখে রাখতে হবে , যাতে কোনো একজনের অভাবে কাজ না-ঠেকে যায়, এবং সমগ্রতার সাধক , অর্থাৎ পুরো মানুষ এবং পুরো শিল্পী। হরিন চট্টোপাধ্যায় , বিনয় রায়ের নেতৃত্বে তৈরী হলো দল ' ভয়েস অফ বেঙ্গল ।' কলকাতা , দিল্লি , লাহোর , মুম্বাই ঘুরে তোলা হলো ১,২৫,০০০ টাকা দুর্ভিক্ষ পীড়িতের জন্য। শুধু রবীন্দ্রনাথ নয় তৃপ্তি, শম্ভূ, বিজন , বটুক , প্রেম ধাওয়ান,শান্তি বর্ধন , রবিশঙ্করের হাত ধরে আসমুদ্র হিমাচল পরিচিত হলো বাঙালির সৃষ্টিশীল সৃজনশীলতার সংগে। আর আদিষ্ট দেবব্রত বিশ্বাস ? তিনি প্রতিজ্ঞ মন রাখলেন জায়গায় জায়গায় গিয়ে গান শেখাবার অভিযানে : হাওড়া ময়দানে রেলশ্রমিকদের , চাপদানি চটকল - মজুরদের , কালীঘাট ট্রাম শ্রমিকদের।
কথাগুলো বলতে বলতে আলেয়া সিনেমার পিছনের বাড়ির একতলায় , খালেদ চৌধুরীর চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। শরীর খারাপ ডায়ালিসিস চলছে। শেষ বয়েসে আবেগের তালা চাবিগুলো কোথায় যে হারায়ে কে জানে !
অনুসূয়া অশীতিপর শিল্পীর সংগে কটা পছন্দসই ছবি তুলে , তাঁকে প্রণাম করে বেরিয়ে পড়লো। য়ুনিভার্সিটির ইলেকশন আসন্ন। কিন্তু কোর কমিটির মিটিঙে সে আজ যাবে না। বাড়ি ফিরে এলো। আয়নার সামনে বসে সিগারেট ধরিয়ে দেখলো তুমুল বৃষ্টি এলো বলে । পাশের বাড়ির মাসিমা শাঁখ বাজাচ্ছেন। জানলাগুলো খোলা দরকার।
'কি রে , কি হলো ?'
'কিছু না। '
'তাহলে।'
'ভাবছি।আমরা রবীন্দ্রনাথ শরৎচন্দ্র ধুয়ে আচমন করি কিন্তু এই আধুনিক ভারতীয় সংস্কৃতি , এই আজকের গান,নাটক,চলচিত্র এর ওপর ওই দামাল সময়ের, ওই গণনাট্য সংঘের সংগ্রামী শিল্পীদের প্রভাব কতটা গভীর , কতটা সুদূরপ্রসারী , সেটাই ভাবছি। আমরা এর কতটুকু জানি , কিংবা কতটুকু জানানো হয়েছে। নাকি এটাই ফ্যাক্ট যে নেতৃত্ব খুব সচেতন ভাবে নিজের মুখোশ ঢাকতে এইসব গুলিয়ে দিয়েছে। কোনটা ? কেন এই পর্বের ইতিহাস লেখা হয় নি ? বিশ্লেষণ করা হয়নি? ভারতীয় কম্যুনিস্ট পার্টির জীবনে তো সেই এক বার এবং দুর্ভাগ্যবশত শেষবার ধলেশ্বরী মাতলার ঢল নেমেছিল। তারপর থেকে তো সাম্যবাদী বৃন্দাবনে শুক সারির গপ্পো ম্রিয়মান। 'পটলডাঙার পাঁচালি' মুখ থুবড়ে পড়েছে 'পরমপুরুষ শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ'র চরণে।
আগামী প্রজন্ম কি শুধু দেবব্রত বিশ্বাস ক'বার কটা রসাত্মক বাঙাল ভাষায় রসিকতা করলো , মন্জুশ্রী চাকীকে মোটর সাইকেলে নিয়ে কোন কোন গলিতে ঘুরলো , ঘরের কোন দেয়ালে ম্যাডাম শ্রীমতি মিত্রের ছবি টাঙানো আছে , বঙ্গসংস্কৃতি সম্মেলনে কেমন করে সুবিনয় রায়কে বললো - আমার হাতের লাঠিটাও অনেকের থিক্যা বেশি মেসকুলিন , শুধু এইসব দেবব্রত -প্রশস্তির ,মিথরঞ্জক পরচর্চার , হুজুগে আদিখ্যেতার নিরিখেই স্রষ্টার সৃষ্টির বিশ্লেষণ করে চলবে ? এসব করে আমরা তো আমাদেরই ঠকাচ্ছি, চেতনাকে অপমান করছি।
' আম কাসুন্দি নাটকও লিখছি '
'প্রগতির নামে রোদ্দুর রায়ের মতো সাংস্কৃতিক অভিশাপ কে বুকে পিঠে লালন করছি'।
'আজও তো স্টেশনে দুধের শিশু মায়ের মৃতদেহ টেনে নিয়ে যায়। আমরা সেদিনের সেই প্রত্যয় নিয়ে কেন লিখতে পারছি না - না না না/ মানব না মানব না। কোটি মৃত্যুৱে কিনে নেবো প্রাণপনে / ভয়ের রাজ্যে থাকবো না।'
'দায়ী কারা ?'
'নেতৃত্বে যারা। '
'আর আমাদের মতো শুয়ারের বাচ্চারা ?'
'সত্যকে জেনে,সত্যকে বুঝে,তবু মিথ্যেকে বিশ্বাস করি , যারা ।'
অনুসূয়া, দীপকদের মতো জর্জ বিশ্বাসও বুঝেছিলেন। তাই হেমাঙ্গ বিশ্বাস কে এক লম্বা চিঠিতে লিখলেন - গণ নাট্য আন্দোলনের ভিড়ে ছিলাম অনেক ব্যাপারে বিশ্বাস করে। ভেবেছিলাম গণ চেতনায় দেশকে উদ্বুদ্ধ করে দেশে বিপ্লব আনবো। কিন্তু বহু বছর পরে দেখলাম, গ্রাম গঞ্জে , হাটে-মাঠে , গান গেয়ে , 'শহীদের ডাক' দেখিয়ে আধ ইঞ্চিও প্রবেশ করতে পারি নাই। সুতরাং -জনগণ যেখানে ছিল সেখানেই আছে। খামোখা ভুল পথে গিয়ে পড়েছিলাম। নিজের ভুল স্বীকার করছি। আমাগো দ্যাশের লেনিনগুলি সত্যই সব ফলস।একদা আনন্দ নিকেতন এখন ধান্দা নিকেতনে পরিণত হয়েছে।'
সেই শুরু : বাংলা শিল্প সংস্কৃতির অন্তর্জলি যাত্রার ; 'বৈশাখী ঝড়' তুলে পার্টির ছাদনাতলায় শিল্পবাজারের কায়েমী স্বার্থ গড়ে তোলবার প্রচেষ্টার ; জানলা খুলে পর্দা সরিয়ে প্রশ্ন করবার :
হরপ্রসাদ: রাইত কত হলো ? উত্তর মেলে ন। চালাও আমি পিছনেই আছি। কাল সকালে গ্রামবাসীরা হতবাক হয় দেখবে জোড়া মৃতদেহ ঝুলছে।
ঈশ্বর: হরপ্রসাদ তুমি ?
হরপ্রসাদ: না। আমার প্রেতাত্মা। হেরে গেছি আমি। সর্বশান্ত। নড়ি , চড়ি , আছি ! বাজে পোড়া তালগাছ। প্রতিবাদ করেছিলাম। কার প্রতিবাদ ? কিসের প্রতিবাদ ? এখন হয়ে গেসে , একটা দেয়ালে দাম কইরা ধাক্কা খাইয়া একটা যাঁতাকলে অন্ধ হইয়া আষ্টেপৃষ্টে আটকাইয়া আছি। --- আসল কথা কি জানো ভাইডি ও প্রতিবাদই করো আর ল্যাজ গুটাইয়া পলাইয়া যাও কিছুতেই কিছু যায় আসেনা।সব লোপাট। আমরা সব নিরালম্ব, বায়ুভূত। আমরা মিটে গেছি।
হরপ্রসাদ মাস্টারের মতো বাজেপোড়া তাল গাছদের মধ্যে ছিলেন , দেবব্রত বিশ্বাস , জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র , মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় , বিজন ভট্টাচার্য , শম্ভূ মিত্র , ঋত্বিক ঘটক , কেয়া চক্রবর্তী ।বুর্জোয়া প্রগতিশীল শিল্প 'কল্লোল' , 'অগ্রণী কিন্তু অধার্মিক' এঁদের নির্মম ভাবে একা করে দিয়েছিলো। এঁরা একটাই প্রশ্ন শেষ অবধি ফেরি করে বেরিয়েছেন : কেমন সুন্দরভাবে জীবনটা শুরু করেছিলাম। এই ভাবে শেষ হওয়াটা কি উচিত ? এ প্রশ্নের জবাব কে দেবে ? কোন রুদ্ধসঙ্গীতের নাট্যকার ? কলুষিত সংস্কৃতির উঠোনে পুঁজির কৌশলী দাপটে আমরা দিশেহারা।
হায় কমরেড ! আজ রেড রোডে তুমি শুধু মুখোশ পরে সঙ্গীহীন নিষ্ক্রিয় প্রতিবাদের প্ল্যাকার্ড বয় ! হুনুমানের ছুঁড়ে ফেলা কলার ছীলায় দৈনিক পিছলে আবোলতাবোল ছড়া| কোনো 'ব্যারিকেড' গড়ে তোলার ক্ষমতা শেষ। সময়ের হাতে দ্বান্দ্বিক উপহাসের ভাঙা পাত্র |
কমরেড দাসগুপ্ত , ১৯৮২ সালে , ডিসেম্বর মাসে ছ দিন পরে আপনার মৃতদেহ যে শহর থেকে আনা হয়েছিল সেই রাজধানী বেজিঙে পঞ্চাশের দশকের গোড়ায় একদা কমরেড , দেবব্রত বিশ্বাস, কমরেড চু এন লাইয়ের বাড়িতে ফরাশ পেতে , খাতা পেন্সিল নিয়ে দু ঘন্টার ওপর রবীন্দ্রনাথ , সুকান্ত , নজরুল সংগীত শুনিয়ে এবং বুঝিয়ে এসেছিলেন। খবরটা নিশ্চই আপনার জানা ছিল। যেমন জানা ছিল আপনারা দুজনেই হাঁপানি রুগী , এবং ১৯৮০ সালে , ১৮'ই অগাস্টের সেই মহাপ্রয়াণের দিন , শিল্পীর মৃতদেহ নিয়ে যাবার জন্য আলিমুদ্দীনের কাছে বার বার বরফের জন্য দরবার করতে হয়েছিল। প্রথাগত বাম ডিগবাজি।
কমরেড আপনাদের এই উদ্ভট ট্রেডিশন বজায় ছিল ২০০৩ সালেও - সুভাষ কবি যে ৮'ওই জুলাই মারা গিয়েছিলেন। সততার অপ্রতিরোধ্য তাগিদ থাকলে বোধহয় এদেশে তালেবরা কমরেড হওয়া যায় না কিংবা হয়তো কিছুই হয়ে ওঠা যায় না। একে একে তাদের বুকে গোলাপের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে চলে যেতে হয় আগুনের ঘরে।
জর্জ বিশ্বাসও জানতেন তাঁর এই ভবিতব্যের কথা। তবু তাঁর প্রতিজ্ঞ ইচ্ছা ছিল- মরণ হতে যেন জাগি গানের সুরে;যেমন ছিল রবীন্দ্রনাথের - এই কথাটি মনে রেখো , আমি যে গান গেয়েছিলেম। জর্জ বিশ্বাস আর তার রবীন্দ্রগান, হাবা কুমোর আর তার প্রতিমা ভাস্কর্য : দুজনের ক্ষেত্রেই ছিল , খ্যাপার চলতে চলতে খুঁজে পাওয়া সৃষ্টির পরশপাথর। সে মুক্তকচ্ছ হয়ে লেজ কাটারা শিল্পবোধের অভাবের তাড়নায় যতই বাজারে লিখুক ' কার গান ? কার সুর ?' কিংবা ' রবীন্দ্রনাথ 'স্টিম রোলার' চালানোয়ে আপত্তি করেছিলেন , বস্তুটা বাস্তবিক কি , সেটা দেখে বা শুনে যাননি। আরও দুঃখ হয় , যখন তন্নিষ্ঠ যথার্থ কোনো রবীন্দ্র অনুরাগী শিল্পীকে চালকের আসনে দেখি', সে যতই মিউজিক বোর্ড ব্যক্তি- স্বার্থ রক্ষার নীতির কুয়ো তলায় ঘুরপাক খেয়ে , জানলাবন্ধ জারজ অগভীরতায় আটকে অপবাদ দিয়ে থাকুক , ' বেড়াল দুধ খেয়েছে, ভাঁড় ভেঙেছে , মুখ মুছেছে কাঁথাতে।'
কোনো আর্ট কলেজ নয় গঙ্গাপাড়ে এঁটেল মাটিতে হাত ডুবিয়ে হাবা কুমোর প্রথম গণেশ গড়তে শিখেছিলেন। কোনো বিতানে নয় জর্জ বিশ্বাস বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া মাঝি মাল্লাদের সংগে চিৎকার করে ,ক্ষেত মজুর আর ভিখিরিদের সংগে গলা মিলিয়ে প্রথম গান গেয়েছিলেন। চাকরি করতে করতে ফিরে গেছেন সেই অন্ধ ভিখিরির কাছে , আবার আবার করে শুনেছেন - ওই নাম জপ বান্দা , আল্লাহর কালাম , লা লা ইল্লিল্লাহ তোর নাম। হাবা চাক ছেড়ে মাঝে মাঝে চলে যেতেন নিশিকান্তর মনোহারি দোকানে। অবাক হয়ে দেখতেন নানা রঙের পুতুলরা কিরকম কাঁচের বাক্সে হাসি খুশি দাঁড়িয়ে আছে। ওদিকে সাহা এন্ড কোম্পানির সাইকেলের দোকানে কলের গান চলতো আর সেখানে কিশোর গানখ্যাপা জর্জও আঙুরবালা , ইন্দুবালা নানারকম দেবীদের এবং কে মল্লিকের গানে সুরসিঞ্চিত হয়ে উঠতেন। গানের সঙ্গে আরো একটা যোগ ছিল: সে যখন দেবেন্দ্র ও অবলা বিশ্বাস দুজন বসতেন দু মেয়ে আর ছেলেকে নিয়ে সন্ধ্যা বেলায় দৈনিক উপাসনায়। জর্জের কাছে সেই আধ্যাত্মিক সুরের ব্রাহ্ম বন্ধন ওনার ভাষায় 'মানে একদম অত্যন্ত বোরিং ছিল ; ওই মা'ই গান করতেন সঙ্গে সঙ্গে আমি আর আমার দুই বোন কিছুক্ষন ব্যা ব্যা করতাম শেষ হলে পালিয়ে যাইতাম।' হাবা কুমোর জাতে সাঁওতাল ছিলেন। শেষ দিন পর্যন্ত হাঁড়িয়া খেতেন আর স্বকীয় দেশজ ঢঙে বাক্যালাপ করতেন। পুরস্কার বিতরণের ধোপ দুরস্ত মঞ্চে সবাইকার পাশে ,গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি এলোমেলো চুল ,বসতেন লুঙ্গি আর ফতুয়া পড়ে। আর সঙ্গে এক জোড়া আলাদা চোখ-কৌটোয় ভরে রাখতেন দিগন্তজোড়া চাহনি । জর্জ বিশ্বাস- আপনিও শেষ দিন পর্যন্ত জিভে জড়িয়ে রেখেছিলেন শিকড় শব্দ ব্রহ্ম, আপনিও এক মুখ দাড়ি গেরুয়া লুঙ্গি ফতুয়া হাতে লাঠি নিয়ে উঠেছিলেন সম্বর্ধনা মঞ্চে , আলোকিত প্রেক্ষাগৃহে মরা মনের ডালে ডালে তালে তালে নাচিয়ে ছিলেন সুরের আগুন । সে যেন ছিল ওই হাবা কুমোরের খোড়ো চালের নিচে প্রতিমার চক্ষুদানের প্রহরের মতো : যখন অনুভবের চোখ পেয়ে , চোখ ছাপিয়ে দৃষ্টি পেয়ে প্রতিমার অঙ্গে অঙ্গে জ্বলে উঠতো শত শত আলোর ঝলকানি; যখন অনুভবের আততিতে রবিব্রত কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীতের কথা , সুর ,লয়, তান, মাত্রা,ভাব,অনুভব বিধৃত হতো সুরের বিমূর্ততায়।
অনুসূয়ার বারান্দার আকাশে বৃষ্টি থেমে গেছে। মুখে এসে পড়েছে মেঘ ছেঁড়া আলো। চুল উড়ছে ভিজে বিলিকাটা হাওয়ায়। শ্যাওলা বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল। পাশে দীপক। দু হাতের তেলয়ে ফোস্কা। শক্ত করে কিছু ধরবার ক্ষমতা নেই। ডাক্তার অপেক্ষা করতে বলেছে।
অনুসূয়া: জানিস জর্জ বিশ্বাসকে মাঝে মাঝে মনে হয়ে ঋত্বিকের অযান্ত্রিক ছবির বিমল। অপরাহত তবু রবীন্দ্রনাথকে ছাড়েননি। ওনাকে বন্দুকে ভরে গেরিলার মতো ক্ষিপ্র ,দুর্বার গতিতে , সংস্কৃতির ঢাল বেয়ে নেমে এসেছেন, নরক-কলকাতার জন চেতনার মধ্যে। হি ক্র্যাশড ইন্টু আওয়ার কনশাসনেস উইথ রবীন্দ্রনাথ।
দীপক: মধ্যবিত্তের হৃদি - রাজপথে একের পর এক বোমা বর্ষণ। আকাশ ভরা সূর্য তারা , যে রাতে মোর দুয়ারগুলি , কেন চেয়ে আছো গো মা। মস্তিষ্ক ফাটানো - দুম !দুম!দুম!
অনুসূয়া: সংস্কৃতির সদ্য আগাছা শ্রীল রোদ্দুর রায়েরা শুনুন , আপনারা যাঁরা গলা ভারী করে মস্তিষ্কবিহীন দেবব্রত বিশ্বাস হতে চান তাঁরা শুনুন , আপনারা যাঁরা মাথায় গামছা বেঁধে রবীন্দ্রসংগীতকে নিয়ে নানা রকম আলতা আদুরী মিউজিক আরেঞ্জমেন্ট করে ওয়াই এস মুলকি-জর্জদা কম্বো করতে চান তাঁরা শুনুন, এই ঋষিজ শিল্পীর একটা নির্দিষ্ট দ্বান্দ্বিক সচেতন দৃষ্টিকোণ ছিল এবং আজও কালপটে ভীষণরকম আছে। সেখানে মধ্যবিত্তের মানসপট এফোঁড় ওফোঁড় করে জগদ্দল,বিমল,ঋত্বিক ,দেবব্রত,বিজন,শম্ভূ,জ্যোতিরিন্দ্র'রা আছড়ে পরার চরম মুহূর্তে বেজে ওঠে , অবরোহনের পর আরোহনের মঙ্গল শঙ্খ। সেখানে সজ্ঞান চৈতন্যে শিল্পী গেয়ে ওঠেন - যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙলো ঝড়ে, জানি নাই তো তুমি এলে আমার দ্বারে। সেখানে মাথার হিসেবে কান শোনে , গলায় সর্গম খেলে।
দীপক: আপামর গিলেকরা শান্তিনিকেতনী বৈয়াকরণিকদের চরম অস্বস্তিতে ফেলে কাউন্টার- ন্যারেটিভ , ' মাউন্টবেটন সাহেব ও , তোমার সাধের বেটন কার হাতে থুইয়া গেলা ও ' , রেনোয়া'র 'দ্য রিভার' ছবিতে গাওয়া ভাটিয়ালি দিয়ে উপচানো লিপস্টিক পারফিউম জামদানি রবীন্দ্রসভা শুরু হয়। কিংবা লেনিন জন্ম শতবার্ষিকীতে যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে মঞ্চে উঠে চলতি - পেত্রোগ্রাদ থেকে ভোলগার তীর থেকে কমরেড লেনিনের আহ্বান , না গেয়ে , গায়ে আমার পুলক লাগে চোখে ঘনায়ে ঘোর গেয়ে ছড়িয়ে দিলেন চুম্বনে চুম্বনে শত হৃদয়ে তন্ত্রীতে রবীন্দ্র বারুদ ডোর।
সত্যই জর্জ বিশ্বাস বঙ্গবাসীকে বেঁধেছিলেন রবীন্দ্র বারুদ ডোরে। জনৈক নন্দদুলালের মতো বেলোতে হাওয়া মেরে কম্পাসের কাঁটার মতো মাথা দুলিয়ে লবঙ্গ ভালোবাসার আদুরী গোলাপ নয় , ওনার ' ভালোবেসে সখি নিভৃতে যতনে' পরিবেশনে , ঠাসা ভালোবাসার হৃদয় তছনচি বারুদ।
আমি কোনো মধ্যমেধা পুষ্ট মেরুকরণ করে মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল খেলতে চাইছিনা তবু এখানে ইতিহাসের পাতা পাল্টে উপযুক্ত ঘটনার একটা প্রেক্ষিতপূর্ণ দৃষ্টান্ত দিতেই হচ্ছে। বিশ্বভারতী আশ্রমের ভেকধারী সর্বজ্ঞরা যখন জেনেছিলেন শ্রীমতি সুচিত্রা মিত্র ,সলিল চৌধুরীর 'সেই মেয়ে ' গান টি গেয়েছেন , তখন তাঁরা শিল্পীর সামনে উক্ত গানের রেকর্ড লাথি মেরে ভেঙে , চূড়ান্ত শর্ত দিয়েছিলেন। ১৯৫০ সালে শিল্পী শ্রীমতি মিত্র আপোষ করেছিলেন। সাহস করে আর ফিরে যাননি কোনো সলিলসঙ্গীতে। দেবব্রত বিশ্বাস , বাংলার পল রবসন , কিন্তু সেই ছাতিমতলার স্বৈরতন্ত্রের মুখে তুড়ি মেরে গেয়ে গেছেন ' তোমরা যা বোলো তাই বলো' আবার 'যদি কিছু আমারে সুধাও ' কিংবা ' অবাক পৃথিবী ।' বারবার বলে গেছেন - কার কথা মেনে নোবো ? রবীন্দ্রনাথ - না , যাঁরা নতুন নিয়মগুলি করেছেন , তাঁদের ? আমাদের মাতামহীর আমলের জীর্ণ কাঁথা দিয়ে ঘিরে রেখে এবং পলতেয় করে ফোঁটা ফোঁটা নিয়মের বিধান খাইয়ে রবীন্দ্রসংগীতকে টিকিয়ে রাখা যাবে এমন কথা রবীন্দ্রনাথ নিজে কি ভাবতে বা বলতে পেরেছিলেন কোনোদিন?
অনুসূয়া: এই শোন আজ বাইশ। যাবি?
দীপক: কোথায় ?
অনুসূয়া: জর্জ বিশ্বাসের বাড়ি।
দীপক: ফিশ এন চিপস আর দার্জিলিং টি।
অনুসূয়া: জানিস উনি খাওয়াতে বেশ ভালোবাসতেন। রান্নাটাও যুৎসই করতেন। মাংস আর খিচুড়ি রান্না করতে করতে বলতেন - দ্যাখেন , মুরগির নিজস্ব একটা ফ্লেভার আছে। রসুন না দেওনের মতো, জল কম , হলুদ কম। দেখতে হইবো কষতে কষতে যেন সিদ্ধ হইয়া যায়।
দীপক: চল। খিদেও পেয়েছে।
তারপর ওরা দুজন পৌঁছে গেলো রাসবিহারী রোডের ট্রায়াঙ্গুলার পার্ক। একটু এগুলেই , সেদিনের সেই শ্যাওলা সবুজ গলির গায়ে আজ নতুন রঙের প্রলেপ , ঝলমলে আলো ; সেই ঘুপচি ঘর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত , পাশাপাশি মাদুর কার্পেট ; কাঁচের দরজা ঠেলে , সেই লাল সিমেন্টের সিঁড়ি বেয়ে ওরা উঠে গেলো দোতলায়। কোথাও তেল চিটচিটে বিছানা নেই , লুঙ্গি নেই , খয়ের রঙের দাঁত নেই , 'ব্রোভোন' কোম্পানির ইনহেলার নেই ; সূক্ষ্ম শরীরী তাঁকে , ওরা দেখতে পেলো - গলা ছুঁয়ে নেমে আসছে মেঘ , হৃদয় ডুব দিয়েছে মানস সরোবরে , সুরলোকে বসে গাইছেন - রূপসাগরে ডুব দিয়েছি অরূপ রতন আশা করি ।
ওদের কথা শেষ। আমারও। রবীন্দ্র সায়রে হোক আবার দেবব্রত সিনান।
© দেবাশীষ গোস্বামী
শরৎ সাজে গাছের পাতায়,
ফুলের মায়ায় পাখির গানে ।
আকাশ সাজে মধুর আলোয়,
প্রভু ধায় যেন মন তোমা পানে ।
।।শুভ সকাল ।।
এক্রোপলিস মল থেকে উদয়ন
এক্রোপলিস সামনে বট,
অদ্ভুতুরে এক চিত্রপট ।
রঙবেরঙের মোহিনী মায়া
মনের কি আছে ছায়া ?
আকাশ ঝরে ঝিরি ঝিরি,
পথ যে এগোয় তারাতারি ।
উল্টোদিকে চিনি কম
ফুটপাথেই পুরি ,আলুর দম ।
ভিজেই বসে সবুজ পাখি
ভাঙা ফোনেই ছবি আঁকি ।
একলা পথে বন্ধ খাম,
কিইবা আছে কোন সে নাম ।
সেকেন্ড ওয়াইফ দাড়িয়ে ডাকে
বিরিয়ানির গন্ধ নাকে ।
ঝোপের মাঝেই নয়নতারা,
কোন সে ডাক আকুলকরা ।
মুখ ঢেকে দেয় ধুসর ধোঁয়া
রমনী তুমি কি সে কায়া।
ভালোবাসার ব্যাকআপ,
মাথায় আসে প্রচুর চাপ ।
হঠাৎ পথে সোমেশদাদা,
কবিতা আমার ঘুমিয়ে কাদা ।
।।কাল সকালে পথে হেটে যেতে যেতে একটু পাগলামি ভাগ করে নিলাম ।।
আমার বাইশে শ্রাবন আমি একান্ত অন্তরালে একলা কাটাতে চেয়েছি , চেয়েছি আমার একলা চোখের জলে আমার বেদনা ,ব্যাথা , আমার অসম্পুর্নতাকে নিজের সাথে ভাগ করে নিতে।এই নিতান্ত অকর্মন্য অতিরিক্ত মানুষটা অনবরত ঘুরে বেড়ায় আপন খেয়ালে ,মাধুকরীতে দিন কাটায়, কিসের যে খোঁজ নিজেই তো জানেনা । তবু চরৈবতি ।
এই বাইশে শ্রাবনে আমার যত পাপ যত অন্যায় যত ভুল সবটুকুর জন্য সবার কাছে আমার মাথা নত করে দাও হে । সব্বাই যদি আমার কালো ভুলে সাদাটুকু, যদি কিছু থাকে ,মনে রেখো, তাহলেই আমার মানবজনম সার্থক ্।
এই বছর এই দিন টা আমার দুখের ঝুলি ভরে দিয়েছে , আমি পরিপুর্ন । এই দিনে আমার মেঘদুত কে দিলাম আমার খুব কাছের আমার একলা আপনার দুগ্গাকে অন্জলি শিউলি ফুলে।দুগ্গা ভালো থেকো।
আর
সব্বাইকে বাঁধি মিলাই আপন সুরে
স্বপ্নে কল্পে থেকো কাছে ,নয়কো দুরে ।
আপন খেয়ালে গাই যে আমার গান,
আহা মরনরে তুহু মম শ্যাম সমান ।
সতীশ,satishacharya2018.blogspot.com
প্রতিদিন মরা,প্রতিদিন বাঁচা,
জীবনের এই বন্ধনডোর ।
আঁধার শেষে আলো ফুটুক
হোক আমাদের মনের ভোর ।
।।সুমনে সারাদিন ।।
ভোরের ডাক ওই শোনা যায়,
জীবন খোঁজে নতুন আশা আর আলো ।
অনন্তআলোক পথ ওই দেখা যায়,
পাগলমন তোমার অন্তরনয়ন খোলো ।
শ্রাবন্তী ,তুই কেন দুগ্গা হলিনা ।
আমরা তো ক্লীব, তাদের কাছেই,
তুই তাদের কাছেই হেরে গেলি
একলা লড়াই জিততে পারলিনা ।
আমরা তো মুখোশ পরে ঘুরে ফিরি,
সু কথার বন্যা ভাসাই,
ভালো মানুষের নাটক করি ,নাটকটা
তুই তুইরে কেন ধরতে পারলিনা।
এতো বড়ো খোলা আকাশ,
আদিম এই জঙ্গল,এই ঘন জঙ্গল
ছেড়ে তোর ডানা মেলে কেন
কেন রে তুই উড়ে গেলিনা ?
তুই ভালো ছিলিনা,
গুমরে গুমরে কাঁদছিলি
কেন কাঁদলি,কেন কাঁদলি?
কঠিন হয়ে খাঁচা কেন ভাঙতে পারলিনা ??
দুগ্গা দুগ্গারে...
ekta metho manush,otath keutake bollo, ei fanushe chorbi onek onek uchute akashe urte parbi,koto kichu dekhte parbi ,se beta chasa bollo kono dorkar nei hal chosi ,gaa er pothe ghure berai,golpo kori,dukkho,sukh bhag kore madhukori kori jibon kate anonde,eito besh,kintu porom mongalmoy er icchai take jor kore fanushe chorie dilo,sabeki rajbarir pujoy fanush oranor moto ghotona arki,kodin beta chasa moner anonde ghure beray akashe ,nicher monushgulo choto bindur moto lage,kauke chena jaina,sobbai koto dure ,kauke choa jaina,kintu fanushe tar besidin jaiga holona, onno swajonra take ektu kom chailo,othoba jaiga kom porlo,dhup kore porlo se ek jongole,ekhon pothe pothe ghure beray se, khoje purono juridar der,gramer bhanga barir uthone madur pete gaan gai,chobi dekhe ,chesta kore jibonke notun kore jante pagol,pagol jibon