চিলেকোঠার মেঝেতে মুখ লুকিয়ে যদি পাওয়া যায় মাটীর একমুঠো সোঁদা ঘ্রাণ ।
সেই কত যুগ ধরেে শবর।
বৃষ্টি যদি আকশের মায়া কাটিয়ে ফেরে বুড়ো বটের শিকড় সঙ্গমের মুক্তপথে,যদি।
দিনভর একটা ভোতা ছুরি দিয়ে গরাদের জঙ ঝরানোর কাজে ব্যস্ত ছিলেম,না, সুন্দর ধপধপে সাদা পাঞ্জাবি পরে পতাকা তোলায়,লবন্চুস বিতরণে কেউ আমাকে ডাকেনি,বাতানুকুল ঘরে বসে দুলাইন বা চারলাইন কবিকথা লেখার অবসর পাইনি, গরাদের তালাটাতো খুলছেই না।
সকালেই মানুর সাথে দেখা হয়েছিল,বছর পাঁচেক বয়স, চটপটি,মার সাথেই বেরোয়,রোজ সকালে, আমাদের পাকা বাড়ির পাশেই বস্তিতে ওদের বসত।
আজ একটু আগেই বেরিয়েছে,বাবুর বাড়িতে সবার ছুটি, ভালো খাওয়া দাওয়া,মাকে একটু না অনেকটা গতর খাটাতে হবে,ওই বাড়ির মালকিন, সোফায় পা দোলাতে দোলাতে কালকেই বলছিল,মানু শুনেছিল।
মানু বলছিল, ফেরার পথে আজ এই দিনটায় ওর অনেক মজা,বাবুর বাড়িতে অনেক খাবার , রাস্তায় যেখানে পতাকা ওড়ে সেখানেই মিঠাই, লবন্চুস,মজাই অনেক।
ওর আকাশে নীল আকাশে পতপত পতাকা , ঘুড়ি,ওর ভালো লাগে, ওখানে বাপটাকে খোঁজে,পথেও,ওর এখনো মনে আছে ,বাপটা ওর ,মাটাকে লাথি মেরে,বছর তিনেক আগে কোথায় ? মনে আছে।
মাটির সোঁদা গন্ধ কি পাওয়া যাবে পাকা মেঝেতে,জ্যোৎস্না কি গল্প করতে নামবে হাজার লোকের ভিড়ে রেল কামরায়,এখন শহর গ্রাম হাজার মানুষের ভিড় প্ল্যাটফর্মেই তো , এখানে পা রেখেই তো একমুঠো ভাতের খোঁজ।
হে কবি,তোমায় কি নদী ফুলহার কোনদিন আদরে ভরিয়েছে? উঁচু বাঁধে খোলা আকাশ তলায় বসে লিখেছ মানুর হারিয়ে যাওয়া বাবার ইতিহাস তোমার শ্বাধীন লেখনীতে?
মাফটাই কোরো,এই পশুখামারের জঙ ধরা গরাদের আড়ালে থাকা মাটীর সোঁদা গন্ধ খুঁজে ফেরা পাগলটাকে,
সেলুলার জেলের সেই পাগলটাকেও মাফ কোরো ,যে আজো গাঁথে রক্তের করবী।
কালাপানির এলোচুলে যদি ফিরে পাই সেই নাও, একদিন মানুর হাত ধরে যদি ফিরিয়ে দিতে পারি ওর বাপের ঘেমো হৃদয় ,এই ৭৫ বছর বয়সেও খুঁজি গরাদভাঙা সেই জীবন নাও, যেখানে তুমিি,আমি,সে,তারা একসাথে ,এক ছায়ায়,খিদে একথালায়।
স্বপ্ন, কবিতা নয়, বিশ্বাসরেখা একচিলতে।
No comments:
Post a Comment