দিনরাত্রির কাব্য
যদি সত্যি সত্যি একটু পাগল হতে পারতেম। চলার পথে এই জনঅরন্যে কেবলই মুখোসগুলি হাঁটছে ,চলছে ,ফিরছে , অন্তহীন অক্লান্ত অভিনয় ।আমি আমি আমি শুধু আমি, আমার সুখ, আমার পরিবার ,ছোট সুখী পরিবার, আর.. আরে আর তো কিছুর দরকার নেই ভাই ।তোমাকে ঠকাতে পারলেই আরেকটু বেশী সুখ ।তোমাকে টেনে পিছনে ফেলে আমি আরেকটু এগোই্। নিজেরই বিজ্ঞাপন প্রতি পল, আমিই সবথেকে উপাদেয় , অতীত- বর্তমান -আগামী একটু কি অন্যরকম হতে পারেনা ?
সারাদিনের একই অভিনয়ের পুনঃ মন্চউপস্থাপন । নিজের ভুমিকা নিয়েই বড়ো চিন্তা ।সাঁঝবেলায় একান্ত আপন উঠান ডাকে অপার মধু সুরে ।আঁধার আকাশের সাথে গভীর গোপন ভালোবাসা, অশেষ কথামালা , রোহিনী, কৄত্তিকা, অনুরাধা, মৄগশিরা নেমে আসে রাত মজলিসে প্রেম বন্যাধারাস্নান । ভিজে যাই, সাথে চিরসখা রবিবাউল আমার ইশ্বর, জীবন এতো মধুর লাগে । সব পাওয়া না পাওয়া একাকার হয়ে যায় । দিনভোর যে মাধুকরী,রাতআঁধারে ঝোলা উপচে পড়ে ।রাতজোনাকআলোয় নিজের সব পাপ ধুয়ে যায় ।বেল জুই কামিনী আর হাসনুহানায় আমি মরে বেঁচে জাগি অপলকে।নিশি আকাশ জুড়ে আমার দুগ্গা হাসিমুখে ।
কখন যে ভোর হয়ে আসে ,জীবন বয়ে চলে, আজ আছি , কাল তো নেই ।নাথ হে আবার ফিরে ডেকো তোমামাঝে , ভুলোনা , ভুলোনা , ভুলোনা .......
নীলকন্ঠ তুমি অচিন বোবা সবুজ বনে ,
করাত কলে এখন শুধুই ডানা কাটছেই।
উড়ে কি আর পারবে পৌছুতে তীরে রঙ্গিত,
হাজার হাজার মাইল হাঁটা ক্লান্ত নিশ্বাস।
বন্দী মন চায়ের কাপে খোঁজে রুঢ় উত্তাপ,
লিখতে পারিনা ,তবু দেওয়ালে কাটি কেবলই আকিবুকি।
শক্তি পাগল কে প্রতি দিন রাত অহরহ হৃদি মাঝে রাখি, তার এক লেখা
আমি যাকে ভালোবাসি
- শক্তি চট্টোপাধ্যায়
আমি যাকে ভালোবাসি সে অন্তত আমাকে গোপনে মেরেছে সহস্রবার
কিন্তু আমি মরিনি একাকী
দৃশ্যত নিস্তব্ধ হয়ে, তাকেও মুখর করে রাখি
ক্রন্দনে, মরিনি বলে তাকেও মুখর করে রাখি!
যেভাবে মানুষ থাকে, পাথর ইটের মতো নয়;
অঙ্গে অঙ্গে লেগে থাকতো শাঁড়াশির মতন মাথুর।
সহসা কি ঝড়ে হলে নিরুদ্দেশ? এই লুকোচুরি
খেলার প্রধান কাল ছেড়ে একি দুঃসময়ে, দূরে...
মানুষের মধ্যে আছো? নাকি স্থির গাছের ভিতরে?
#সুখে_থাকো
#শক্তি_চট্টোপাধ্যায়
চক্রাকারে বসেছি পাঁচজনে
মাঠে, পিছনে পড়ছে আলো
অন্ধকার সন্ধ্যা নামে বিড়ালের মতো ধীর পায়ে
তুমি এসে বসেছো আসনে অকস্মাৎ।
হঠাৎই পথে ঘুরতে-ঘুরতে কীভাবে এসেছো
একেবারে পাশে,
তোমার গায়ের গন্ধ নাকে এসে লাগে
বৃদ্ধের রোমাঞ্চ হয়!
খুব ভালো আছো?
অন্তত এখন, তুমি?
তুমি ঠিক আছো?
না থাকার মানে হয়
বিশেষত যখন এসেছো
কৃপা করে।
কৃপা বাক্যবন্ধ তুমি কিছুতে ছাড়বে না!
ছাড়া যায়?
কিছুক্ষণ আছো?
হ্যাঁ, হাতে সময় আছে
তাই, পায়ে পায়ে
এখানে এসেছি চলে।
শুনেছি, সন্ধ্যার আড্ডা তোমার এখানে
যদি ভাগ্য ভালো হয়, দেখা পেয়ে যাবো,
ভাগ্য ভালো।
এমনই এসেছি,
তোমাকে দেখার জন্য আজ কটি দিন
কী ইচ্ছা করছিলো।
জানালে যেতাম।
কিছুতে যেতে না।
‘কাল আসবো’ বলে তুমি পালিয়ে এসেছো
সেই কাল কবে হবে? ভেবেছি তোমার
সময় অত্যন্ত কম,
আমি নিজে আসি।
আমার সময় আছে…দীর্ঘ অবসর!
চক্রাকারে বসেছি পাঁচজনে।
পাঁচজনের মধ্যে থেকে একা একা একান্ত দুজন,
পাঁচজন বুঝেছে সবই
নিচুস্বরে কথা চালাচলি করে যাচ্ছে অহেতুক শ্লথ,
পাঁচজনের মধ্যে থেকে একা একা একান্ত দুজন
অকস্মাৎ।
ধীরে ধীরে রাত বেড়ে যায়।
সন্ধ্যার আঁচলে মুড়ে করতল অন্য পাতে পায়–
করস্পর্শ।
পাখির পালক হাত খেলা করে কর্কশ মুঠিতে,
পাঁচজনে সমস্ত দেখে ধীরে ধীরে কোথা উঠে যায়
একাকী দুজনে রেখে।
চলো পৌঁছে দিয়ে আসি তোমার বাড়িতে।
যাবে?
কেন নয়।
চলো।
একগাড়ি আঁধার আজ দক্ষিণে দৌড়ায়
দ্রুত।
মনে হয়, গতি বড় দ্রুত বিদ্যুতের মতো!
কথা বলো।
কী কথা বলার?
আছে।
কাছে আছো, এ যথেষ্ট নয়?
যথেষ্ট যথেষ্ট। আজ দিন বড় বেশি কিছু দিল।
সত্যি একে দেওয়া বলো এখনো তুমিও।
না বলার সাধ্য আছে?
বহুদিনই ভাবি, হঠাৎ চলেই যাই, গিয়ে দেখে আসি–
আছোটা কেমন?
কিন্তু বড়ো ভয় করে
যদি তুমি কিছু ভাবো?
অন্যের সংসারে ও কেন হঠাৎ আসে?
সেই জন্যে ভয়,
জড়িয়ে যাবার ভয়,
মন্দ ভাগ্যে ভয়!
বড়ো দ্রুত যাচ্ছে গাড়ি সমূহ দক্ষিণে
গাড়ির আঁধার হলো হাসিতে উজ্জ্বল
এবং মধুর গন্ধ ছড়ালো বাতাসে।
আবাল্য তোমার কিছু পাওনা রয়ে গেলো।
আমি বলি শোধ হয়ে গেছে।
আজি, এইমাত্র, এই এতো কাছে পেয়ে
জীবনে এতোটা কাছে তোমাকে পাইনি,
একা বহুক্ষণ ধরে গাড়ির ভিতরে।
গাড়ি বাঁয়ে চলো, গাড়ি এখন দক্ষিণে
কিশোর প্রেমের মতো অত্যন্ত রঞ্জিত
এই সুসময় আজ দিনশেষে কেন!
মূর্ছার ভিতরে নেমে, দু’কদম গিয়ে
ফিরে এসেছিলে…
আজ নয়, অন্য একদিন।
আর দরজা থেকে একা ক্লান্ত ফিরে যাও,
দুর্বলতা গলা টিপে আছে,
আজ নয়, অন্য কোনদিন
আমার সর্বস্ব নিও।
আজ নয়, অন্য কোদিন…
তুমি হাত দুটি ধরে মুখমণ্ডলের
উপরে আগ্নেয় পাত কেন বা ঘটালে?
সর্বস্ব পেয়েছি আমি আজই, অকস্মাৎ।
সুখে থাকো, আমি ফিরে যাই
একা একা।
আর এই পাগল